আওয়ামী লীগের তরুণ প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রাপ্তির লড়াইয়ে
রাজনীতিতে বইতে শুরু করেছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনি হাওয়া। আওয়ামী সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নির্বাচনি আসনে গিয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি আসছে ধরে নিয়ে নির্বাচনি ছক করছে আওয়ামী লীগ। সূত্র জানায়, সারা দেশে এখন দ্বিতীয় দফা নির্বাচনির কাজ করছে বিশেষ একটি সংস্থা। প্রথম দফা জরিপের রির্পোট এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। জরিপে দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে আওয়ামী লীগ দলীয় শতাধিক সংসদ সদস্য নিজ নিজ এলাকায় জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন। এমনকি বিভিন্ন সময়ে সংবাদ মাধ্যমে খারাপ খবরের শিরোনাম হয়েছেন। আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী মহল এসব বিতর্কিত সংসদ সদস্যদের বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত তরুণ এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের মনোনয়ন দেওয়ার চিন্তা করছেন। এমন বার্তার শতাধিক আসনে আওয়ামী লীগের অপেক্ষাকৃত তরুণ প্রার্থীরা মনোনয়নের লড়াইয়ে নেমেছে।
জানা গেছে খুলনা, ঝালকাঠি দিনাজপুর, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, পটুয়াখালী, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনা, ঢাকা, সুনামগঞ্জ, চট্টগ্রাম, পিরোজপুর, বরিশাল, ভোলা, মুন্সীগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনা, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, সুনামগঞ্জ, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, কক্সবাজার, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গাইবান্ধা, যশোর, রাজশাহী, লক্ষ্মীপুরসহ আরও বেশকিছু জেলায় একাধিক আসনে পরিবর্তন আসতে পারে।
জরিপে এবং সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, অপেক্ষাকৃত তরুণ সাবেক ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগের নেতারা, আওয়ামী লীগ সমর্থিত পেশাজীবী অনেকে নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে বেশ ভাল অবস্থায় রয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে সাবেক ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নেতা এবং আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন (চট্টগ্রাম-১৪) বিশ্বনাথ সরকার বিটু (রংপুর-২), অ্যাড. আনোয়ারুল ইসলাম (রংপুর-৩), সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন (গাইবান্ধা-৫), সাখাওয়াত হোসেন শফিক (বগুড়া-৭), ইঞ্জিনিয়ার আকতারুল আলম (নওগাঁ-২), মাহমুদ রেজা (নওগাঁ-২), রতন কুমার সাহা (নাটোর-১), কোহেলি কুদ্দুস মুক্তি (নাটোর-৪), অ্যাড. রবিউল আলম বুদু (পাবনা-৩), রফিকুল ইসলাম লিটন (পাবনা-৩), অ্যাড. এ বি এম আহসানুল হক আহসান (যশোর-৩), কামরুল হাসান বারী (যশোর-৫), সাইফুজ্জামান শিখর (মাগুরা-১), পংকজ সাহা (মাগুরা-১), ড. ওয়াহিদুর রহমান টিপু (মাগুরা-২), শ্যামল দাস টিটু (নড়াইল-১), নিজাম উদ্দিন খান নিলু (নড়াইল-), বদিউজ্জামান সোহাগ (বাগেরহাট-৪), আকতারুজ্জামান বাবু (খুলনা-৬), আব্দুল মালেক (পটুয়াখালী-২), জিয়াউল হক জুয়েল (পটুয়াখালী-২), শাহে আলম (বরিশাল-২), মনিরুজ্জামান মনির (ঝালকাঠি-২), এস এম মশিউর রহমান শিহাব (বরগুনা-১), মারুফা আক্তার পপি (জামালপুর-), অসীম কুমার উকিল (নেত্রকোনা-৩), শফি আহমেদ (নেত্রকোনা-৪), আলমগীর হাসান (নেত্রকোনা-৩), অজয় কর খোকন (কিশোরগঞ্জ-৫), গোলাম সরোয়ার কবীর (মুন্সীগঞ্জ-১), ইঞ্জিনিয়ার কাজী আবদুল ওয়াহিদ (মুন্সীগঞ্জ-২), ফয়সাল বিপ্লব (মুন্সীগঞ্জ-৩), পনিরুজ্জামান তরুন (ঢাকা-১), ড. আওলাদ হোসেন (ঢাকা- ৪), অ্যাড. মোল্লা আবু কাউসার (ঢাকা-৮), গোলাম রব্বানী চিনু (ঢাকা-১৩), ইকবাল হোসেন সবুজ (গাজীপুর-৩), অ্যাড. রিয়াজুল কবীর কাউসার (নরসিংদী-৫), শেখ সোহেল রানা টিপু (রাজবাড়ী-১), ড. আবদুস সোবহান গোলাপ (মাদারীপুর-৩), আনোয়ার হোসেন (মাদারীপুর-৩), দেলোয়ার হোসেন (মাদারীপুর-৩), ইকবাল হোসেন অপু (শরীয়তপুর-১), এ কে এম আজম খান (পিরোজপুর-১), এনামুল হক শামীম (শরীয়তপুর-২), বাহাদুর বেপারী (শরীয়তপুর-৩), মঈন উদ্দিন মঈন (ব্রাহ্মণবাড়ীয়া-২), সুজিত রায় নন্দী (চাঁদপুর-৩), ড. মোস্তফা কামাল খান (চঁাঁদপুর-৫), মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন (চট্টগ্রাম-৬), মাইনুদ্দিন হাসান চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৪), ড. মাহাবুব উল ইসলাম (খুলনা ৫), মমিন পাটোয়ারি (লক্ষ্মীপুর-১), আরিফুর রহমান দোলন (ফরিদপুর-২), নফিউল রহমান নাফা (নীলফামারি ৪ ), রবিউল ইসলাম রবি (ঠাকুরগাঁও-৩)।
এসব প্রার্থীরা নিজ নির্বাচনি এলাকার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। এলাকার জনগণের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন। চেষ্টা করছেন সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকার উন্নয়নে অবদান রাখতে। তারা আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডিস্থ দলীয় কার্যালয়, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় গণভবন, প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাদের বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করছেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, যাদের কর্মকা-ের কারণে দলের ভাবমূর্তি বিগত দিনে নষ্ট হয়েছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগামী দিনে তারা মনোনয়ন পাবে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অপেক্ষাকৃত তরুণ স্বচ্ছ নেতাদেরই গুরুত্ব দেওয়া হবে। মনোনয়ন প্রত্যাশীর অবশ্যই দল ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি মনে করি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি আসবে। রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকার জন্য তাদের নির্বাচনে আসতে হবে। ক্ষমতায় যাওয়ার লড়াইয়ে নামতে হবে। এসব বিবেচনা করেই আওয়ামী লীগ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগামী নির্বাচনে জনসম্পৃক্ত প্রার্থী বাছাই করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে আওয়ামী লীগ। সম্পাদনা: বিশ্বজিৎ দত্ত