রাজধানীতে বাড়িওয়ালাদের জঙ্গি আতঙ্ক : বিপাকে ব্যাচেলররা
আহম্মেদ মুন্নি : গ্রাম ছেড়ে রাজধানীতে আসা মানুষের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এদের কেউ আসছে লেখাপড়া করতে আবার কেউ আসছে জীবিকার সন্ধানে। যাদের বেশিরভাগই ব্যাচেলর। সম্প্রতি রাজধানীতে জেএমবি, হিজবুত তাহরীরসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত বিভিন্ন সংগঠনের জঙ্গি তৎপরতার কারণে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। রাজধানীতে চাকুরীজীবি ও ঢাকার বাইরে থেকে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের এক সময় রামপুরা এলাকায় সাবলেট বা ব্যাচেলর মেস ভাড়া নিয়ে থাকতে পারলেও বর্তমানে ব্যাচেলর শব্দটা শুনলেই বাড়ীওয়ালা আতকে উঠছেন। আবার কোন কোন বাড়ীওয়ালা বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দিয়ে অসাধু উপায়ে তিনমাস, ছয়মাস চুক্তিভিওিক হারে আগাম চুক্তিনির্ধারিত মাসের ভাড়া অগ্রীম নিয়ে নিচ্ছেন । ফলে ব্যাচালরাদেরকে মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের জন্য প্রতিনিয়ত বিপাকে পড়তে হচ্ছে।
নঁওগা থেকে পড়তে আসা আলম সিকদার পড়েন মহাখালী আমতলীর তিতুমীর কলেজে অনার্স চর্তুথ বর্ষে । ঢাকায় আছি ২০১৩ থেকে, এক বাসাতেই একই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচজন মিলে তিন রুমের ফ্লাটটি ভাড়া নেয়। গত বছর বাড়াটিয়াদের না জানিয়ে বাড়ির মালিক বাড়িটি বিক্রি করে দেন । নতুন বাড়িওয়ালা তাদের বাসাবদলের নোটিস দেন এই বলে যে, আমার বাসায় ব্যাচেলর ভাড়া দেয়া হবে না। তারপর থেকে এ বছর পর্যন্ত আট বার বাসা বদল করেছি । আর বাসা ভাড়া নিতে গেলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মালিকরা বাসাভাড়া দিতে রাজি হন না। কেউ রাজি হলেও দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া, এক , দু মাস না যেতেই ভাড়া বাড়ানো ও মাসের শেষদিকে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেন ।
কথা হয় নাজমুন্নাহার রাহেলার সাথে,তার বাড়ি নরসিংদিতে। এনজিওতে চাকুরী করছেন। তাই চাকুরীর সুবাদে দুই মেয়ে মায়ের কাছে রেখে যাত্রাবাড়ী শনিআখড়ায় কয়েকজন সহকর্মী নিয়ে ভাড়া থাকেন। ভোটার আইডি থেকে শুরু করে কর্মস্থল ও পরিবারের পুরো বায়োডাটা দিয়ে,অগ্রীম তিন মাসের ভাড়া দিয়েও ব্যাচেলর বলে বাসা ভাড়া পেতে খুব কষ্ট হয়েছে। এ বিষয়ে পূর্ব রামপুরা গোপিবাগ স্ট্রোল ্উইমেন্সের পাসেই সিপ্রোড্রেলা এ্যার্পাটমেন্টের মালিক মতিয়ারা বিলকিসের সাথে কথা হয়। তিনি পেশায় একজন শিক্ষিকা। তিনি বলেন, যেহেতু সরকারের কোন বাসা বা ফ্লাট ভাড়ার মূল্য নির্ধারন করা নেই। তাই সবাই সবার অবস্থান,যাতায়াত লোকেশন,বাড়ির পরিবেশ,আলো বাতাস ও ওই ্ওলাকার জীবনযাত্রার মানের উপর ভিত্তি করে বাসা ভাড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়। তিতাস রোড কল্যান সমিতির সভাপতি আব্দুল লতিফ তালুকদার (পিপি) বলেন, আমি যদিও আইনের লোক তবুও ব্যাচেলরদের ভাড়া শুধু নয় যে কোন পরিবারকে ভাড়া দেওয়ার আগে সরকারের ভাড়াটিয়া তথ্য ফরম পূরণকে সাধুবাদ জানায়। আর নিরাপত্তাই প্রধান বা সেফটি ফাস্ট। সে কারণেই ব্যাচেলরদের ভাড়া দেওয়া থেকে অনেক বাড়িওয়ালাদের অনাগ্রহ।
এ বিষয়ে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রলয় কুমার সাহা জানায়, বিট পুলিশিং কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রতিটি থানা এলাকার মত তার এলাকাতে ভাড়াটিয়া বাড়িওয়ালাদের তথ্য ফরম বিতরন ও সংগ্রহ করে অনলাইন ডাটাবেস তৈরি করে সংরক্ষন করা হয় । ব্যাচালারদের ভাড়া না দেওয়ার বিষয়টির অভিযোগ পাইনি । এবিষয়টি বাড়ির মালিকের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়। তিনি কাকে ভাড়া দিবেন বা দিবেন না এটা নিজস্ব ব্যাপার। তবে ভাড়া যাকেই দেন না কেন ভাড়াটিয়া ফরমে পূর্ন তথ্যসহ ফরম পূরণ করে থানায় জমা দিতে হবে। আর প্রতি মাসেই এই তথ্য বাসা পরিবর্তনের জন্য হালনাগাদও করা হয় । সম্পাদনা: আবু সাইদ