জান্নাতুল ফেরদৌস পান্না : সুনামগঞ্জের হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)’র সাত কর্মকর্তা তাদের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন দুদকের মহাপরিচালক (ডিজি) মুনীর চৌধুরী। গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদেরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক।
যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে, পাউবোর অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) আবদুল হাই বাকী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হারুনুর রশিদ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব খলিলুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী আবদুল হাই, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম ও সুনামগঞ্জে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আফসার উদ্দিন।
এ বিষয়ে দুদকের মহাপরিচালক মুনীর চৌধুরী বলেন, সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় বাঁধ নির্মাণের গাফিলতির কথা তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা তা স্বীকার করেছেন পাউবোর মহাপরিচালক। দায়ীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। মুনীর চৌধুরী বলেন, ‘হাওরে বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের বিষয়টি অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে। তবে বাস্তবতা উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি যে, বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রচুর গাফিলতি ছিল। তারা এই প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। ডিজি থেকে শুরু করে প্রায় সবাই স্বীকার করেছেন, পানিতে বাঁধ ডুবে গিয়েছে। পরে তারা এভাবেই চলে এসেছে।
জানা যায়, ২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল ‘সুনামগঞ্জে ফসল রক্ষা বাঁধে ভাঙন’ শীর্ষক একটি সংবাদ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন চেয়ে দুদক থেকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হলেও সেটি করা হয়নি। প্রায় এক বছর পর চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয় দুদকে। দুদকের দাবি, ওই প্রতিবেদনে কোনো মতামত, বিশ্লেষণ কিংবা সুপারিশ ছিল না। এ ছাড়া প্রতিবেদনটিতে বাঁধ ভাঙার কারণ হিসেবে প্রাকৃতিক কারণকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এই প্রতিবেদন অসন্তুষ্ট, বিলম্বে পাঠানো ও বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনার জন্য এই সাত কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে আইন প্রয়োগ করা হবে জানিয়ে মুনীর চৌধুরী বলেন, ‘দুর্নীতির প্রমাণ পেলে দুদক তার যে নিজস্ব আইন আছে সেটি প্রয়োগ করবে। দুর্নীতির প্রমাণ এখনই বলা যাবে না। বিষয়টি অনুসন্ধানের পর তদন্ত হবে। কিন্তু আমাদের জিজ্ঞাসাবাদে যেটি উঠে এসেছে, তারা (পাউবি) কাজ আদায় করতে পারেনি। কাজ সম্পাদনে ব্যর্থ হয়েছে এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে যে অনিয়ম সেটি তারা স্বীকার করেছেন। সম্পাদনা : শিমুল মাহমুদ