মেয়েদের জন্য সবকিছুতেই বাধা
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নিধি আলম বলেন, আমি অষ্টম শ্রেণিতে ওঠার পর থেকেই শুধু চারদিক থেকে শুনেছি না। মাঠে গিয়ে খেলা যাবে না, একার বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না। কাউকে না বলে কিছু করা যাবে না। যা কিছু করি অনুমতি নিতে হবে।
এটা শুধু আমার ক্ষেত্রে হয়নি। এটা এদেশের সব লেভেলের মেয়েদের জন্য। আমার কাজের বুয়ার মেয়েটির জন্যও সবকিছু মানা। আবার আমার জন্যও সবকিছু মানা। এই মানা জীবনকে অনেকটাই পিছিয়ে দেয়। এটা মেয়েদের জন্য অনেক বড় একটা বাধা। এই বাধা অতিক্রম করতে পারে না বেশিরভাগ মেয়ে। আমি যত বাধা পেয়েছি আমার ছোট ভাই ততটাই হ্যাঁ পেয়েছে।
নিধি বলেন, মুখে মুখে পরিবারের লোকজন মেয়ে ও ছেলে সমান বললেও যখন মেয়েরা কোনো কিছু করতে যায় তথাকথিত সমাজের বাইরে, তখনই বলবে তুমি মেয়ে। তুমি এটা করতে পারো না। সামাজিকভাবে তুমি সমস্যায় পড়বে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রোমানা ছোটবেলা থেকেই ফ্যাশন সচেতন। সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে পোশাক পরেন তিনি। তিনি বলেন, যেই পোশাকই পরি তাতেই ইভটিজিং এর শিকার হই। ঘর থেকেও বাধা। এসব বাধা ভালো লাগে না। ভাই যাই পরে তেমন কিছু বলে না। আমি একটা ভালো পোশাক পরলেই বলতে থাকে, তুমি মেয়ে যা ইচ্ছে তাই করতে পারো না। তোমার জন্য মানুষের কথা শুনতে হয়।
গত রোববার রোমানা এই প্রতিবেদককে বলেন, আমি খুব ভালো মুডে বের হলাম নতুন একটা ড্রেস পরে। কিছুই না। গরম তো, জাস্ট জামার হাতাটা একটু ছোট করেছি। একটি চায়ের দোকানে
গেলাম টাকা খুচরা করতে। দেখি চায়ের দোকানিসহ যতজন ছিল-সবাই আমার হাতের দিকে তাকিয়ে আছে। ঘাড় কাত করে দেখার চেষ্টা করছে। আর কিছু দেখা যায় কি না। প্রতি মুহূর্তে মনে হয়, মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়াই হলো অপরাধ। এত অস্বস্তি নিয়ে একটা মেয়ে কিভাবে বড়ো হবে।