কে হবেন ফ্রান্সের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট? লি পেন ও ম্যাক্রোঁর ভাগ্য নির্ধারণ আজ
কামরুল আহসান : আজ ৭ মে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মুখোমুখি হচ্ছে প্রথম রাউন্ডে এগিয়ে থাকা দুই প্রার্থী ন্যাশনাল ফ্রন্টের মেরিন লি পেন এবং এল মার্সির ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। প্রথম রাউন্ডে ম্যাক্রোঁ এগিয়ে ছিলেন ২৪.১ শতাংশ ভোট পেয়ে, আর লি পেন ছিলেন দ্বিতীয় পর্যায়ে ২৩. ৫০ শতাংশ ভোট পেয়ে।
আজ শুধু ফ্রান্স নয়, সারা বিশ্বই তাকিয়ে আছে তাদের মুখের দিকে। কারণ, তাদের দুজনের যেকোনো একজনের উপর নির্ভর করছে ফ্রান্সের ভাগ্য-নির্ধারণসহ সারা ইউরোপ এবং সারা বিশ্বেরই ভাগ্য নির্ধারণ। লি পেন কট্টরপন্থি, কিছুটা রক্ষণশীল, বিশ্বায়নের বিপক্ষে আর একেবারেই ফ্রান্সের জাতীয়তাবাদ কেন্দ্রিক। সেদিকে ম্যাক্রোঁ উদারপন্থি, বিশ্বায়নের পক্ষে। এবং শুধু ফ্রান্স নয়, তিনি চান ফ্রান্সসহ পুরো ইউরোপকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যেতে। তাই নিয়েই দুজনের দ্বন্দ্ব। লি পেনের অভিযোগ ম্যাক্রোঁর বিপক্ষে, আপনি প্রেসিডেন্ট হলে ফ্রান্সকে জার্মানি বানিয়ে ছাড়বেন। অর্থাৎ, কাজ করবেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বার্থে, আর অভিবাসী দিয়ে ভরিয়ে ফেলবেন নিজের দেশ। সেখানে মুসলিম সন্ত্রাসীরা এসে যা খুশি তাই করবে। তার বিপরীতে ম্যাক্রোঁ প্রতিবাদ করে জানিয়েছেন, আর আপনি প্রেসিডেন্ট হলে আমাদের ভাগ্যে গৃহযুদ্ধ ছাড়া আর কিছুই থাকবে না। টেলিভিশনের শেষ বিতর্কে গত বৃহস্পতিবার এমনই বাকবিত-ায় মুখোমুখি হয়েছিলেন দুজন। শুধু তারা দুজন নয়। মূলত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার আর অভিবাসন ঠেকানো নিয়ে কে কী করেন তা নিয়েই ভাগ হয়ে গেছে পুরো ফ্রান্স। সেখানে এ দুজন সমগ্র ফ্রান্সেরই প্রতিচ্ছবি।
আজ সেই ভাগ্য নির্ধারণের দিন পুরো ফ্রান্সের এবং এ দুজনের, লি পেন ও ম্যাক্রোর। কে হবেন ফ্রান্সের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট!
লি পেন যদি প্রেসিডেন্ট হন তাহলে তিনি হবেন ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফ্রান্সের কোনো নারী প্রেসিডেন্ট। আর ম্যাক্রোঁ যদি প্রেসিডেন্ট তাহলে তিনিও হবেন এক নতুন ইতিহাস। কারণ, রাজনীতির বাইরে থেকে এসে আচমকা তিনি প্রেসিডেন্ট হয়ে যাচ্ছেন। তা সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও হয়েছেন। কিন্তু, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ম্যাক্রোঁর পার্থক্য, তিনি ট্রাম্পের মতো লোকরঞ্জনবাদী নন। কোনো বিদ্বেষ ছড়িয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেননি বরং তিনি সমন্বয়পন্থি। সমন্বয়ের ডাক দিয়েই তিনি ফ্রান্সকে এক করতে চান।
তো দেখা যাক কী হয়। সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশের মানুষও তাকিয়ে আছে এ দুজনের মুখের দিকে। স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় শুরু হবে ভোটগ্রহণ, আর তা শেষ হবে সন্ধ্যা ৭টায়। বাংলাদেশ সময় মধ্যরাত নাগাদ জানা যাবে চূড়ান্ত ফলাফল। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি