দুই বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে তা ১০ বছরেও সম্ভব নয় : সাঈদ খোকন
শাকিল আহমেদ : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এগিয়ে যাচ্ছে। নানা ধরনের পরিবর্তন দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। যত দিন যাবে এ পরিবর্তন তত দৃশ্যমান হবে। নির্বাচিত মেয়াদের মধ্যেই ঢাকাকে একটি আধুনিক, পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর নগরী হিসেবে গড়তে সক্ষম হবো। দুই বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে তা ১০ বছরেও সম্ভব নয় বলে মনে করেন সাঈদ খোকন। গতকাল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের দায়িত্বভার গ্রহণের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে নগর ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন।
সাঈদ খোকন বলেন, আমি যখন মেয়রের দায়িত্বভার গ্রহণ করি তখন নগরীর রাস্তাঘাট ছিল ভাঙাচোরা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়েছিল। ১০ ভাগ সড়কে বাতি জ্বলতো না। মশক নিধনের ওষুধ ছিল না বললেই চলে। বাজেট বহির্ভূত ব্যয়ের কারণে ঠিকাদারদের বহু বিল বকেয়া ছিল। বিল বকেয়া থাকায় নগর ভবনের বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করার উপক্রম হয়েছিল। এ রকম একটি প্রেক্ষাপটে দায়িত্ব নেওয়ার পর আমাকে সবকিছু নতুন করে ভাবতে হয়েছে। একদিকে ঋণগ্রস্ত অবস্থা অন্যদিকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে মেয়রের কাছে নগরবাসীর পর্বত সমান প্রত্যাশা।
এর মধ্যেও আমার আত্মবিশ্বাস ছিল আপনাদের সহযোগিতা পেলে এসব বাধা অতিক্রম করে রাজধানীকে একটি সুন্দর পরিচ্ছন্ন বাসোপযোগী নগরীতে গড়ে তুলতে পারবো।
মেয়র আরও বলেন, আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিল গুলিস্তান, মতিঝিল ও নিউমার্কেট এলাকার ফুটপাত দখলমুক্ত করা। যখন অভিযান শুরু করি তখন অনেকের মনেই এ অভিযানের সফলতা নিয়ে সংশয় ছিল। কিন্তু আমরা এই এলাকার ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে পেরেছি। এ থেকে নগরবাসীর মনে আস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
আমাদের প্রচেষ্টা ও কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এলাকায় আমরা পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছি। মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনে সক্ষম হয়েছি। আমি তরুণ। তাই দায়িত্ব পালনে কখনও ভীত হইনি বলে জানান সাঈদ খোকন।
এ সময় মেয়র বিগত দুই বছরে যেসব উন্নয়নমূলক কর্মকা- বাস্তবায়িত হয়েছে ও চলমান রয়েছে তার কিছু উল্লেখযোগ্য চিত্র তুলে ধরেন তিনি, যেমনÑ ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্তকরণ, সড়ক, ড্রেন ও ফুটপাত উন্নয়ন, এলইডি বাতি স্থাপন, কোল্ড মিলিং মেশিন দিয়ে সড়ক নির্মাণ, রোড মার্কার, মেগা প্রকল্প, অবৈধ বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন অপসারণ। জল সবুজে ঢাকা প্রকল্প, রোড মিডিয়ান সৌন্দর্যবর্ধন, শান্তিনগর এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, ই-টেন্ডার চালু করা, পাবলিক টয়লেট নির্মাণ ও সংস্কার, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন এবং মার্কেট অপসারণ, ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ, পুরনো যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, অবৈধ কেমিক্যাল কারখানা অপসারণ অভিযান, জনতার মুখোমুখি জনপ্রতিনিধি অনুষ্ঠান, তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন, সামাজিক ও ধর্মীয় কার্যক্রম, রাজস্ব বিষয়ক উন্নয়ন, মডেল রোড নির্মাণ করা, মশক নিধন কার্যক্রম, ঢাকা উৎসবের আয়োজন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন, নন্দীপাড়া খাল উদ্ধার। দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলে থাকা সায়েদাবাদ এবং ইংলিশ রোডে ট্রাক স্ট্যান্ড উদ্ধার করা। গোলাপবাগ মাঠ, শিশু পার্কের সামনের অবৈধ পার্কিং দখলমুক্ত করা হয়েছে। নারিন্দাতে প্রায় ০.৭৭০০ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিল সম্প্রসারণকল্পে ৮১ একর ভূমি অধিগ্রহণ করার কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। সম্পাদনা : আনোয়ার