মানবিক ঢাকা গড়ে তোলার অভিযাত্রা অব্যাহত : মেয়র আনিসুল হক
ডেস্ক রিপোর্ট : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেছেন, ২০১৫ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর উন্নয়ন কর্মকা-ে নতুন মাত্রা যোগ হয়। নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একটি পরিচ্ছন্ন, সবুজ, নিরাপদ, স্মার্ট, আলোকিত ও মানবিক ঢাকা গড়ে তোলার যে অভিযাত্রা শুরু করেছি তা অব্যাহত রয়েছে। সূত্র : জাগো নিউজ
আনিসুল বলেন, মাত্র দুবছর আগের কথা। ঢাকার রাজপথে মানুষের দৃষ্টিসীমার পুরোটা জুড়ে ছিল নানা আকারের রঙ-বেরঙের বিলবোর্ড। রাস্তার পাশে, ভবনের ছাদে কিংবা দেয়ালে হাজার হাজার বিলবোর্ড শহরের সৌন্দর্য ম্লান করে দিয়েছিল। সে চিরচেনা রূপ বদলে গেছে। গত দুবছরে ২০ হাজার বিলবোর্ড অপসারণ করা হয়েছে। গাবতলী আর আমিনবাজারের অবৈধ পার্কিং উচ্ছেদ করা হয়েছে। ফলে সেখানে ঘণ্টাখানেক যানজটে আটকে থাকা এখন কেবলই অতীত স্মৃতি। তেজগাঁও সাতরাস্তা থেকে অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ড উচ্ছেদ করা হয়েছে। সেখানে এখন প্রশস্ত সুন্দর রাস্তা। বাগ-এ-মোনায়েম, ঢাকা ওয়েস্টিন বা ম্যারিয়ট হোটেল, রাশিয়া কিংবা ইতালি দূতাবাস কাউকে রাস্তা কিংবা ফুটপাত অবৈধ দখলে রাখতে দেয়া হয়নি। জনগণের রাস্তা ও ফুটপাত জনগণকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বেচ্ছায় পারিবারিক কবরস্থান সরিয়ে নিয়েছেন উত্তরার সরকারবাড়ি আর মিরপুরের মাতবরবাড়ির বর্তমান বংশধরেরা। শুধু তাই নয়, উত্তরায় রাস্তার পাশের অতি মূল্যবান ৪৮০ বর্গফুট জমি রাস্তা প্রশস্তের জন্য সিটি কর্পোরেশনকে দান করার নজিরও স্থাপিত হয়েছে এ দুবছরের মধ্যে।
আনিসুল হক বলেন, উন্নত নাগরিক সেবার লক্ষ্যে ‘নগর’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছে। নগরবাসী এতে তাদের পরামর্শ ও অভিযোগ সরাসরি প্রেরণ করতে পারেন। সমুদয় ক্রয়প্রক্রিয়া শতভাগ ই-টেন্ডারিং চালু হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপনের পাশাপাশি অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার, কর্মচারীদের জন্য ডিজিটাল হাজিরা পদ্ধতি এবং সিটি কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয়সহ আঞ্চলিক কার্যালয়সমূহে ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক চালু করা হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিনামূল্যে ওয়াই-ফাই সেবা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে কর্পোরেশনের একটি ডায়নামিক রেসপন্সিভ ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ চালু আছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে প্রতিদিন ২৩০০-২৬০০ টন বর্জ্য সংগ্রহ ও পরিবহন করে ল্যান্ডফিলে নেওয়া হয়। পূর্বের তুলনায় বর্জ্য সংগ্রহ ও পরিবহনে দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ৮টি ওয়ার্ডে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এ ৮টি প্রতিষ্ঠান প্রায় ৩৫-৪০ শতাংশ বর্জ্য পরিবহনে অবদান রাখছে। ডিএনসিসির কর্মকা-ে বিভিন্ন কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বারিধারা, নিকেতন ও গুলশান সোসাইটি ডিএনসিসির সহযোগিতায় তাদের নিজ নিজ এলাকার পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব নিয়েছে।
আনিসুল হক বলেন, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৬৮ কিলোমিটার ড্রেন পরিষ্কার করা হয়েছে। ডিএনসিসির নিজস্ব কর্মীরা নিয়মিত পরিচ্ছন্নতার কাজ অব্যাহত রেখেছেন। এছাড়া জরুরি মুহূর্তে নগরীর নর্দমা দ্রুত পরিষ্কার করতে একটি অত্যাধুনিক জেট অ্যান্ড সাকার মেশিন ব্যবহৃত হচ্ছে। নগরবাসীর সুবিধার্থে নগর পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য শহরের বিভিন্ন রাস্তায় এক হাজার ঢাকনাযুক্ত ময়লা ফেলার পাত্র স্থাপন করা হয়েছে। সম্পাদনা : রিকু আমির