অস্ত্র ব্যবসা ও শান্তি স্থাপন করতে মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্পের প্রথম সফর
পরাগ মাঝি : নির্বাচনি প্রচারণায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোট (ন্যাটো) নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করলেও সম্প্রতি তিনি এই জোটে তার আস্থার কথা জানান। এ মাসেরই শেষদিকে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ন্যাটোর বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ বৈঠকে যোগ দেবেন ট্রাম্প। এর একদিন পরই বিশ্বের শীর্ষ শক্তিশালী দেশগুলোর অর্থনৈতিক জোট জি-৭’র সম্মেলনেও যোগ দিচ্ছেন তিনি। তবে, এ দুটি সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগেই সৌদি আরব, ইসরায়েল ও ভ্যাটিকান সিটিতে সফর করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি স্থাপন করতে উদগ্রীব হয়ে উঠেছেন। কয়েকদিন আগেই ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস তার সঙ্গে হোয়াইট হাউসে সাক্ষাৎ করলে তিনি তার উদগ্রীবতা প্রকাশ করেন।
নিজস্ব বাণিজ্য ও রাজনৈতিক পরিকল্পনা থাকলেও সৌদি আরবের সঙ্গে মার্কিন সম্পর্ককে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন ট্রাম্প। সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ব্যবসার অন্যতম প্রধান ক্রেতা। তাই প্রথম বৈদেশিক সফরের শুরুতেই সৌদি যাওয়ার আগে দেশটির কাছে ১০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়াও বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আসন্ন সৌদি আরব সফরে আরও বেশ কয়েকটি চুক্তি সম্পাদন করবেন ট্রাম্প।
সৌদি আরবে সামরিক উপকরণের প্রধান সরবরাহকারী যুক্তরাষ্ট্র। এফ-১৫ যুদ্ধবিমান থেকে শুরু করে সেনাবাহিনীতে ব্যবহৃত কমান্ড ও কন্ট্রোল সিস্টেমও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে। কিন্তু সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা চুক্তির কারণে সৌদির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে কিছুটা টানপড়েন চলছিল। কিন্তু চলতি মাসেই প্রথম বিদেশ সফরে সৌদি আরব গিয়ে দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নই ট্রাম্পের উদ্দেশ্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন প্রশাসনের একাধিক পদস্থ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সৌদি আরবের কাছে বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র শিল্পে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চান ট্রাম্প। তাই সৌদি আরব সফরে ট্রাম্প রিয়াদকে ১০ বিলিয়ন ডলারের ‘লকহিড মার্টিন’ কোম্পানির তৈরি ‘থাড ক্ষেপণাস্ত্র’ সরবরাহের প্রস্তাব দেবেন। এছাড়া স্যাটেলাইট সামর্থ্যসহ যুদ্ধে কমান্ড ও কন্ট্রোল এবং যোগাযোগ সরঞ্জামের সিটুবিএমসি সফটওয়্যার সরবরাহের চুক্তিও করা হতে পারে সেখানে।
ট্রাম্প ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি এবং ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিষয়টি তার পররাষ্ট্রনীতির আলোচ্য। গত ৪ মে এক বক্তব্যে ট্রাম্প ইসরায়েল ফিলিস্তিনি শান্তি স্থাপন প্রক্রিয়া শুরু করার কথা বলেছেন। তবে, এই শান্তি স্থাপনের জন্য যে দ্বি-রাষ্ট্রনীতি আলোচিত হচ্ছে তার কোনো প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন ট্রাম্প।
রয়টার্সের মতে, ট্রাম্পের পূর্বসূরি বারাক ওবামার সময়ে সৌদি আরব ও ইসরায়েল দুই মিত্রের সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্রের টানাপড়েন তৈরি হয়। তবে ট্রাম্পের এবারের সফরে মূলত ইরান ও ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) প্রতিহত করার বিষয়টিই প্রাধান্য পাবে। রয়টার্স, আরটি, স্কাই নিউজ