আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনি আইন সংস্কার করবে ইসি
সাইদ রিপন : আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনি আইন সংস্কার করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জানাগেছে, চলতি বছরের আগস্টের মধ্যে সংশ্লিষ্ট আইনের খসড়া তৈরির পরিকল্পনা করছে ইসি। তবে এর আগে জুলাই মাসে সিনিয়র সাংবাদিক, সুশীল সমাজ ও এনজিগুলোর সঙ্গে সংলাপ করবে নির্বাচন কমিশন।
সূত্র জানিয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকারি সুযোগ সুবিধা ব্যবহার শেষে রাজনীতিতে আসতে তোড়জোর শুরু করেছেন সাবেক আমলারা। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনে বর্তমান আরপিও সংশোধনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারি চাকরিজীবীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সময়সীমা শিথিলের প্রস্তাবও আসছে বিভিন্ন মহল থেকে। সেই বিষয়টিও এবার অগ্রাধিকার পেতে পারে বলে সূত্রে জানা গেছে। এমনকি এই আইন সংশোধনের বিষয়ে অনেক আমলাও দৌড়ঝাঁপ করছেন। এদিকে নির্বাচনি আইন সংস্কারের বিষয়ে বিগত কমিশন মাঠ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বেশকিছু প্রস্তাবনা সংগ্রহ করে রেখে গেছে। সেগুলোও এবারে নতুন কমিশনের কাছে উপস্থাপন করবে ইসি সচিবালয়। ইসি সূত্রে জানা গেছে, আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশসহ (আরপিও) বেশকিছু নির্বাচনি আইন সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। এরমধ্যে একাদশ সংসদে ইভিএম ব্যবহার, সরকারি চাকরিজীবীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের শর্ত ফিরিয়ে আনাসহ বেশকিছু সংস্কার প্রস্তাব ইসির টেবিলে যেতে পারে। ইসি যুগ্ম সচিব শাহজাহান বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে বেশ কিছু জটিলতা রয়েছে। বর্তমানে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার তিন বছর পরে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পান। সেক্ষেত্রে অনেকে সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন না। তাই বিভিন্ন মহলে এই শর্ত শিথিলের বিষয়ে আলাপ-আলোচনা শোনা যাচ্ছে। অনেকেই এই শর্ত শিথিলের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। তবে বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক পলিসির ওপর নির্ভর করছে সব কিছু। সরকার চাইলে চলতি সংসদে সেই বিষয়ে সংশোধনী আনতে পারে। এছাড়া আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টিও আইনে আনতে হবে বলে জানান তিনি।
বিগত কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন কমিশন বিদায়ের আগে আরপিও সংশোধনের বিষয়ে ইসি সচিবালয়, বিভাগীয় আঞ্চলিক কার্যালয় এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তার কাছে মতামত চেয়ে চিঠি দেয়। সে অনুযায়ী নির্বাচন কর্মকর্তারা আরপিওর বিভিন্ন ধারায় সংশোধনের প্রস্তাব পাঠান। কিন্তু সেই প্রস্তাবনা নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাননি বিগত ইসি। ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, সেইসব প্রস্তাব বর্তমান ইসির কাছে দেওয়া হবে। তারা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। ১৯৭২ সালে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ প্রণয়নের পর এ পর্যন্ত ১১ বার সংশোধনী এসেছে। এর মধ্যদিয়ে বিভিন্ন অনুচ্ছেদে অন্তত ২০৯টি বিষয়ে সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে। ২০০৭ সালে এটিএম শামসুল হুদার ইসি সংলাপ করে আইন সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। নবম সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত তারা কয়েকবার সংলাপও করে। তবে দশম সংসদ নির্বাচনের আগে কাজী রকিবের কমিশন আর সংলাপ করতে পারেনি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমলারা সরাসরি রাজনীতিতে এলে সাধারণ ত্যাগী রাজনীতিবিদরা হুমকির মুখে পড়বেন। সাধারণ রাজনীতিকরা বছরের পর বছর দলের সুখে দুঃখে ছিলেন। সম্পাদনা : শিমুল মাহমুদ