জাফর আহমদ : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি নিয়ে নতুন ‘দিকে’ অনুসন্ধান শুরু করছে রিজার্ভ চুরি অনুসন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিটি। এতদিন ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে সুইফট কোডস পাঠানোর সময় হ্যাকাররা যেসব খাতে ব্যবহারের জন্য অর্থ স্থানান্তরের নির্দেশনা পাঠায়, এসব তথ্য বাংলাদেশে যেসব প্রতিষ্ঠানের কাছে থাকে ওইসব প্রতিষ্ঠানেও অনুসন্ধান করছে তদন্ত কমিটি। ফলে এতদিন বাংলাদেশ ব্যাংকে দায়িত্ব অবহেলা ও সুইফ কোড বা আইটি ব্যবস্থাপনা গাফলতির যেসব কথা বলা হচ্ছিল তার সাথে যোগ হলো আরও ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান।
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হ্যাকের মাধ্যমে রিজার্ভ চুরির পর দুটি কমিটি গঠিত হয়। একটি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাস উদ্দিন নেতৃত্বে, আরেকটি পুলিশের সিআইডির নেতৃত্বে কমিটি। দুই তদন্ত কমিটিই এখন পর্যন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। যদিও পত্র-পত্রিকায় তদন্ত কমিটির বরাত দিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয় বিচ্ছিন্নভাবে এ ব্যাপারে খবর এসেছে। কখনো কখনো তদন্ত কমিটি থেকেও বিষয় ভিত্তিক কিছু কথা বলা হয়েছে। তাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি ব্যবস্থাপনা ও হ্যান্ডেলিংয়ের সাথে সংশ্লিষ্টদের দোষী বলে উল্লেখ করা হয়। সুইফট ও ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকেও বাংলাদেশ ব্যাংকের দুর্বলতাকে ইঙ্গিত করে বক্তব্য দেওয়া হয়।
আধুনিক বিশ্বে ব্যাংক চুরির সবচেয়ে বড় ঘটনাগুলোর অন্যতম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে এ অর্থ চুরি। এই ঘটনায় উত্তর কোরিয়াকে জড়িত বলে দাবি করছে মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। চীনা মধ্যসত্ত্বভোগীদের সহায়তায় উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮০০ কোটি টাকা লোপাট করে বলে এফবিআইর তদন্ত কর্মকর্তারা জানতে পেরেছেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, এ ঘটনায় উত্তর কোরিয়াকে দায়ী করে মামলা দায়েরেরও প্রস্তুতি নিচ্ছে মার্কিন কর্মকর্তারা। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত কমিটি রিজার্ভ চুরির ঘটনা প্রসারিত করছে।
এতদিন প্রতিবেদন চূড়ান্ত প্রায় বলা হচ্ছিল। অপর কমিটির তদন্ত কার্যক্রম তদন্তাধীন ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানায়, রিজার্ভ চুরির সময় হ্যাকাররা অর্থ স্থানান্তর করার যেসব প্রকল্প, পণ্য বা সেবা কেনার বিপরীতে এসব অর্থ পাঠাতে বলেছিল। ওই প্রকল্প, পণ্য বা সেবা কেনা সম্পর্কিত বাংলাদেশ বাংলাদেশে যেসব প্রতিষ্ঠান সংরক্ষণ করে বা এসব কার্যক্রমের সাথে যুক্ত থাকে সেসব প্রতিষ্ঠানে অনুসন্ধান শুরু করেছে। এর মাধ্যম তদন্ত কার্যক্রমের পরিধি বেড়েছে। ফলে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনাতেও তদন্ত কমিটির লোকজনদের পদধূলি পড়বে। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি