ধর্ষিতাদের নাম ও বাসার ঠিকানা গণমাধ্যমে প্রকাশ করা ঠিক নয়
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : বনানীর রেইনট্রি রেস্টুরেন্টে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর ধর্ষণের ঘটনায় কিছু কিছু গণমাধ্যমের ভূমিকায় অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন ধর্ষিতারা।
তারা গতকাল এই প্রতিবেদকের কাছে বলেন, কিছু কিছু মিডিয়া শুরুতেই আমাদের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তারা বলেছে, আমরা সাজানো নাটক করেছি। আমরা সেদিন কতটা অসহায় ছিলাম সেটি বোঝার চেষ্টা করুন। মিডিয়া প্রশ্ন তুলেছে, নির্যাতনের এতদিন পর কেন আমরা মামলা করতে গেলাম। তাও আমরা স্পষ্ট করে বলেছি। পরিবারকে বিব্রত করতে চাইনি এবং সামাজিক নানাদিক বিবেচনা করেই আমরা চুপ ছিলাম। তাছাড়া অপরাধীরা আমাদের নানা হুমকি ধমকি দিচ্ছিলো। সবকিছু মিলিয়ে আমরা ভয়ে কোনো উদ্যোগ নেইনি। কিন্তু তারাই ভিডিওটি আমাদের বন্ধু-বান্ধবদের কাছে প্রকাশ করেছে।
ধর্ষিতাদের একজন বলেন, মামলার পর গণমাধ্যমগুলো যখন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এবং বাসার ঠিকানা প্রকাশ করেছে, তাতে আমাদের পরিবার সামাজিকভাবে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে। বাসার সামনে প্রচুর ভিড় এবং আত্মীয়স্বজনও আসছে। এটা আমাদের জন্য খুবই খারাপ হলো। কারণ আমাদের সমাজের যা অবস্থা তাতে ধর্ষিতারই দোষ হয়।
সিনিয়র সাংবাদিক ও নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু বলেন, ধর্ষিতার ছবি বা নাম ছাপানো গর্হিত কাজ। গণমাধ্যমের নীতিনির্ধারকদের বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখা উচিত। ধর্ষিতা মেয়েদের ছবি যারা ছেপেছেন তারা অবশ্যই ভালো কাজ করেননি। এটা সংবাদপত্র নীতিমালায় পড়ে না। এমনিতেই একটি মেয়ে ধর্ষিতা হলে তার বাবা-মা এবং নিকটাত্মীয়রা সামাজিক সংকটে পড়ে। আর বাসার ঠিকানাসহ ধর্ষিতাদের নাম প্রকাশ করে সেই সব মিডিয়া অন্যায় করেছে। এগুলো নিয়ে সাংবাদিকদেরই সোচ্চার হতে হবে। যারা অতি উৎসাহী হয়ে সংবাদপত্রের নীতিমালা ভঙ্গ করছে তাদের বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।