নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ভ্রাম্যমাণ আদালত বন্ধ হলে বাল্যবিবাহরোধসহ অনেক জনহিতকর কাজ সম্ভব নয়
হুমায়ুন কবির খোকন : নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা বন্ধ হয়ে গেলে বাল্যবিবাহ বাড়বে, ভেজালবিরোধী অভিযান হুমকির মধ্যে পড়বে। এছাড়া অবৈধ ক্লিনিক, হোটেলে পচা-বাসি খাবার বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যাবে। পরিবহনেও বাড়বে ভাড়া নৈরাজ্য। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সারাদেশে বাল্যবিবাহ রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছেন। ইভটিজিং বন্ধেও তারা সফলভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। পরিবেশ দূষণরোধেও তারা কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তাই এই বিষয়গুলো উচ্চআদালত পুনর্বিবেচনা করতে পারেন।
গতকাল এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে সাবেক একজন মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ কথা বলেন। তিনি আশা করছেন, রাষ্ট্রপক্ষ এই বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে মতামত দিবেন এবং আপিল করবেন।
বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এর কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক বলেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত অনেক জনহিতকর কাজ করছে। প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা হিসেবে এই দায়িত্ব পালন করছে। সারাদেশের মানুষ এর সুফল পাচ্ছে। রায়ের বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতের। রাষ্ট্রপক্ষ এই বিষয়ে দেখছে। তারা আপিল করার বিষয়টিও দেখবেন। এই বিষয়ে মামলায় অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন পক্ষ হতে চেয়েছিল, তা করতে দেওয়া হয়নি। এখন রাষ্ট্রই বিষয়টি দেখবেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ধারাটিসহ ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের ধারা-উপধারাসহ ১১টি বিধান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন উচ্চআদালত। ফলে ২০০৯ সালের ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের মাধ্যমে এখন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যাবে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও বিচারকাজ পরিচালনার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১১ ও ২০১২ সালের করা পৃথক তিনটি রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। রায়ে অনাকাক্সিক্ষত জটিলতা ও বিতর্ক এড়াতে উচ্চআদালতে চ্যালেঞ্জ হওয়া বিষয়গুলো ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেওয়া সব আদেশ, সাজা ও দ-াদেশ অতীত বলে সমাপ্ত হিসেবে মার্জনা করা হয়েছে। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন (সাজু) জানিয়েছেন, হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।