ফার্স্ট লেডি ব্রিজিত সামনে থেকেই ভূমিকা রাখবেন : ম্যাক্রোঁ
কামরুল আহসান : ফ্রান্সের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তার সঙ্গে এলিসি প্রাসাদের ফার্স্ট লেডি হিসেবে অধিষ্ঠিত হয়েছেন তার স্ত্রী ব্রিজিট থ্রনিউ স্বামীর চেয়ে ২৪ বছর বেশি বয়সী এ নারী ইতোমধ্যে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন মূলত তার অধিক বয়সের জন্যই। বর্তমান পৃথিবীতে আর কোনো নেতার স্ত্রী নেই যার বয়স স্বামীর চেয়ে বেশি।
তাদের প্রেমের গল্পটি নিশ্চয়ই এতোদিনে সবাই জানেন। ব্রিজিত ছিলেন ম্যাক্রোঁর শিক্ষিকা। নাটক পড়াতেন। ১৪ বছর বয়সে যখন ম্যাক্রোঁ ব্রিজিটের স্কুলে পড়তে যান তখন ব্রিজিট সবার সামনেই তাকে চুমো খেতেন, ছাত্রকে আদর করার হেতু বশত। আজও তিনি সবার সামনেই ম্যাক্রোঁকে চুমো খান, তবে ছাত্র হিসেবে নয়, স্বামী ও প্রেমিক হিসেবে, ভালোবেসে।
১৭ বছর বয়সে ম্যাক্রোঁ যখন ব্রিজিতকে প্রেমের প্রস্তাব দেন তখন ব্রিজিটের বয়স ৪২। তখন তিনি আন্দ্রে-লুইস অজেইরে নামে এক ভদ্রলোকের স্ত্রী। ব্রিজিট স্বাভাবিকভাবেই ছাত্রের এহেন প্রস্তাব পাগলামী বলে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এবং ভেবেছিলেন বয়স হলে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু, ম্যাক্রোঁ বলেছিলেন, বিয়ে করলে তোমাকেই বিয়ে করবো। অবশেষে ২০০৭ সালে বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর ম্যাক্রোঁকে বিয়ে করেন ব্রিজিট। তখন তার বয়স ৫৪ আর ম্যাক্রোঁর বয়স মাত্র ২৯।
মজার ব্যাপার বিয়ের পর ম্যাক্রোঁকে রাজনীতিতে নামতে ব্রিজিতই উদ্বুদ্ধ করেন। কারণ ব্রিজিত নিজে একবার ১৯৮৯ সালে টার্চটারসিম শহরের কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন। ওই একবারই, হেরে গিয়ে আর তিনি রাজনীতির মুখাপেক্ষী হননি।
তাই কি তার নিজের সুপ্ত ইচ্ছা পূরণ করলেন স্বামীকে দিয়ে? ম্যাক্রোঁরও তো রাজনীতিতে কোনো ভূমিকা ছিল না ইতোপূর্বে। ছিলেন ব্যাংকের বিনিয়োগকারী আর ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদের স্বল্পকালীন অর্থমন্ত্রী। হঠাৎ করেই ২০১৬ সালে তিনি নিজের রাজনৈতিক দল গঠন করলেন আর এক বছরের মধ্যেই বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর একটি দেশের প্রেসিডেন্ট!
ম্যাক্রোঁর এই উত্থানের পেছনে শুধু তার অসামান্য প্রেমকাহিনীটি নয়, তার স্ত্রীর ভূমিকাকেও অনেকেই গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। নির্বাচনি প্রচারণার সময় থেকে প্রায় সব সময়ই ব্রিজিট ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ছিলেন। ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা হিসেবেই। অনেকে রসিকতা করে বলেছে একজন যোগ্য শিক্ষিকার মতোই ব্রিজিট ম্যাক্রোঁকে পথ দেখিয়েছে। তাদের বয়সের বিস্তর ব্যবধান নিয়ে অনেক কথাবার্তাও হয়েছে। সেসব থোরাই কেয়ার করেছেন দুজন। ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর জানিয়েছেন, ব্রিজিট আড়ালে থাকবে না, সে আমার পাশেই থাকবে। সামনে থেকেই সে আমাকে নেতৃত্ব দিবে।
মেলেনিয়া ট্রাম্প সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন ট্রাম্পের চেয়ে ২৪ বছর কম বয়সী হয়ে। কিন্তু তিনি এখন আড়ালে। ফ্রান্সের ফার্স্ট লেডি কি তার অসামান্য মননশীলতার গুণে সবার সামনে উদ্ভাসিত হয়ে উঠবেন?
গার্ডিয়ান, উইকিপিডিয়া