শেষ হলো এফবিসিসিআইর নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ
আরিফুর রহমান তুহিন ও তানভীর আহমেদ : আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ, উৎসাহ, উদ্দীপনা আর ভোটারদের সরব উপস্থিতির মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই)-এর ২০১৭-১৯ অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের নির্বাচন। গতকাল রাজধানীর একটি কনভেনশন সেন্টারে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংগঠনটির নির্বাচন কমিশনার সাংসদ আলী আশরাফের নেতৃত্বে সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলে। এফবিসিসিআইয়ের মোট ভোটার সংখ্যা ২৩৪১ জন। নির্বাচনে চেম্বার গ্রুপের প্রার্থীদের একটি অংশ তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় সরকার সমর্থিত চেম্বার গ্রুপ বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ৪৫৪ জন ভোটারকে ভোট দিতে হয়নি। ফলে অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের ১৮ টি পদের জন্য ১৮৮৭ জন ভোটারের মধ্যে ১৬৬৮ জন ভোট প্রদান করেছেন বলে জানিয়েছেন এফবিসিসিআইয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া
সকাল থেকেই শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হয়। যেকোনো প্রকার অপ্রীতিকর অবস্থা মোকাবেলায় নেয়া হয়েছিলো পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ভোটকেন্দ্রে কেবলমাত্র ভোটারদেরকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। কেন্দ্রের বাইরে প্রার্থীদের সমর্থকদের ভোট চাইতে দেখা যায়। নির্বাচন নিয়ে সরকার সমর্থিত সম্মিলিত গণতান্ত্রিক পরিষদের প্রার্থীদের কোনো অভিযোগ না থাকলেও ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের নেতারা আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনেন। তাদের দাবি গণতান্ত্রিক পরিষদের নেতারা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে।
ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক মোহাম্মদ উল্লাহ পলাশ বলেন, নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যানের ছেলে মুনতাকিম আশরাফ সরকার সমর্থিত প্যানেল থেকে নির্বাচন করছেন। তিনি মোবাইলের মাধ্যমে ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্ছেন। আবার সরকার সমর্থীত প্রার্থীর সমর্থকরা ভোটকেন্দ্র এসে শ্লোগান দিচ্ছে। এর সবগুলো নির্বাচনী আচরণবিধির বাইরে। এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী গতকাল থেকে সকল প্রকার প্রচারণা বন্ধ থাকার কথা থাকলেও ভোটকেন্দ্রে এসে তারা প্রচারণা চালাচ্ছে। অথচ কমিশন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে ভোটাররা প্রভাবিত হতে পারে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, অনেকেই যেকোনো কারনে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিলেও শুধুমাত্র গণতন্ত্র রক্ষা করতে তারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপারে জানতে চাইলে সম্মিলিত গণতান্ত্রিক পরিষদের প্রার্থী রাশেদুল হোসাইন চৌধুরী জানান, তারা গতকাল থেকেই প্রচারণা বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের কিছু উৎসাহি সমর্থক বাইরে শ্লোগাণ দিলেও তারা তা বন্ধ করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বিরোধী পক্ষের সমর্থকরাও বাইরে শ্লোগান দিচ্ছেন বলে জানান তিনি। মুঠোফোনে ভোট চাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযোগটি মিথ্যা বলে জানান তিনি।
নির্বাচনে ভোট গণনা নিয়ে যেকোনো প্রকার অভিযোগ এড়াতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছিলো নির্বাচন কমিশন। ভোট গণনা কেন্দ্রে ভিডিও ক্যামেরা দিয়ে সরাসরি ভিডিও করা হয় এবং বাইরে দর্শকদের প্রজেক্টরের মাধ্যমে তা দেখানো হয়। এফবিসিসিআইর অফিস সূত্রে আরো জানা যায়, ২৪টি পদে বড় ব্যবসায়ী সংগঠন থেকে পরিচালক মনোনয়ন দেওয়া হবে। আগামী ১৬ মে পরিচালকদের ভোটে সভাপতি, প্রথম সহসভাপতি ও সহসভাপতি নির্বাচিত হবেন। সরকার সমর্থীত সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের বিপরীতে এখনো পর্যন্ত কেউ সভাপতি প্রার্থী না হওয়ায় তিনিই একমাত্র সভাপতি প্রার্থী।
লবন ব্যাবসায়ী এ্যাসোসিয়েশনের হয়ে মো: নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যাবসায়ী নিজ নামে লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে ভোটকেন্দ্র ভোট দিতে আসলে পুলিশ তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে নজরুল পুলিশকে জানান, অস্ত্র নিয়ে ভোট দিতে আশা নিষেধ এটা তার জানা ছিলো না। পরে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। তার ভোটার নম্বর ৮৪৩ বলে জানা যায়।