বিএনপির রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং বিবেচনাবোধের সীমাবদ্ধতা লক্ষণীয়
বিএনপির ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করেছে। এ বিষয়ে আমার প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক। বিএনপির মতো একটি দল মাত্র কিছুদিন আগেও সহিংস রাজনীতি করেছে, জ্বালাও-পোড়াও করেছে। তারা তাদের রাজনৈতিক অবস্থান ও নিজেদের করণীয় সম্পর্কে একটি দিকনির্দেশনা জনগণের সামনে তুলে ধরেছে এই ভিশনের মধ্যে দিয়ে। এটি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক।
বিএনপি নির্বাচনমুখী হতে চায় বলেই প্রতীয়মান হয় রূপকল্প-২০৩০ ঘোষণা থেকে। অর্থাৎ জনগণের কাছে পৌঁছানোর জন্য যে সমস্ত অঙ্গীকার করা দরকার সেগুলো তারা করেছে। একটি সুস্পষ্ট ধারণা জনগণের সামনে তুলে ধরতে চাইছে। নব্বইয়ের পরে তারা অন্তত ২ বার ক্ষমতায় ছিল কিন্তু তারা তখন এই অঙ্গীকারগুলো সম্পর্কে কোনো বিবেচনাই করেনি। বিবেচনার মধ্যে যখন অভাব ছিল তখন আমার কাছে মনে হয়, এই রূপকল্প যদি গল্প জগতেই থেকে যায় তাহলে তা হয়ে যায় কল্পরূপ। তেমনটি হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না সেটা ভেবে দেখতে হবে।
এখন হয়তো নির্বাচনে যাওয়ার ইচ্ছে থেকেই জনগণের সামনে অনেক লোভনীয় এবং আকর্ষণীয় কথা তারা বলছেন। তবে বিএনপির ঘোষিত রূপকল্প-২০৩০ যেন অনেকটাই আওয়ামী লীগের রূপকল্প- ২০২১ এবং ২০৪১ এর ছায়া পড়েছে। তাতে আমি আপত্তির কিছু দেখছি না। কারণ আওয়ামী লীগ যদি একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে থাকে, তাতে যদি বিএনপি অনুসরণ করে সেটাও ইতিবাচক। কিন্তু একই সঙ্গে আবার তাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং বিবেচনাবোধের একটা সীমাবদ্ধতা এর মধ্যে লক্ষণীয়। তারা তো অনায়সেই তাদের প্রজ্ঞা, মেধার মিলন ঘটিয়ে নতুন কিছু অঙ্গীকার করতে পারত, সেটা তারা করেনি। এখন সমস্যাটা হয়ে যাচ্ছে, বিএনপি নেতৃত্ব এবং সাংগঠনিক দিক দিয়ে অত্যন্ত দুর্বল। এমন একটা দলের পক্ষে এ রকম একটি উচ্চাভিলাসী রূপকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে কি না সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। তবে সব মিলিয়ে বিএনপির ভিশন-২০৩০ স্বাগত জানাচ্ছি। বিএনপি অন্তত সুষ্ঠু একটি রাজনৈতিক ধারায় ফিরতে চায় এবং এই সুযোগটি তাদের দেওয়া উচিত বলেই মনে করি। সম্পাদনা : আশিক রহমান