হোটেল দ্য রেইনট্রিতে অভিযান মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর না পেলেও মদ পেয়েছে কাস্টমস, তিন মামলা দায়ের
সুজন কৈরী : রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে অভিযান চালিয়ে ৩টি কার্টনে থাকা ১০ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করেছে শুল্ক ও গোয়েন্দা তদন্ত অধিদফতরের (কাস্টমস) কর্মকর্তারা। গতকাল রোববার দুপুরের দিকে শুল্ক বিভাগের বিভাগীয় পরিচালক সিফাত মরিয়ম ও শুল্ক গোয়েন্দার যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ শফিউর রহমানের নেতৃত্বে ওই হোটেলে অভিযান চালানো হয়।
গত শনিবার একই হোটেলে অভিযান চালিয়ে বেআইনি কিছু পায়নি বলে জানিয়েছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের গুলশান সার্কেলের পরিদর্শক ওবায়দুল কবির। গতকাল দুপুরে অভিযান শেষে সাংবাদিকদের শুল্ক গোয়েন্দার যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ শফিউর রহমান জানান, রেইনট্রি হোটেলের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, কালোবাজারি এবং শুল্ক ফাঁকি আইনে তিনটি মামলা দায়ের করা হচ্ছে। তিনি বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে অপারেশন্স কাজ শুরু করলেও রেইনট্রি হোটেল ভ্যাট দেওয়া শুরু করে মার্চ থেকে। ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ লাখ ১৫ হাজার টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। তিনি জানান, হোটেলে বিদেশি মদ, ড্রিংকস, লিকার ও বিয়ার পাওয়া গেছে। জব্দকৃত পণ্যগুলো আমদানিযোগ্য। কিন্তু তারা সরাসরি আমদানি করেনি। সঠিকভাবে ভ্যাট দিয়ে তারা আমদানি করেনি। অন্য কারও কাছ থেকে অথবা অন্য মাধ্যমে তারা ভ্যাট ছাড়া ক্রয় করেছে। আমদানির ক্ষেত্রে এলসি করতে হয়। কিন্তু তাদের এলসির কোনো ডকুমেন্ট আমরা পাইনি। আপাতত এসব স্মাগলিংয়ের পণ্য বলে প্রতীয়মান। এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। তিনি বলেন, আমাদের পাওয়া কিছু ডকুমেন্টে দেখা গেছে, হোটেলটিতে প্রচুর পরিমাণ বিয়ার বিক্রি হয়। কিন্তু তাদের কোনো বার নেই। বারের অনুমোদনও নেই। কোনো পণ্য বিক্রি করলে রাজস্ব কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করবে। পণ্যের মূল্য তালিকা তৈরি করবে। নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করতে পারবে। এ শুল্ক কর্মকর্তা বলেন, রেইনট্রি হোটেলে ফ্রান্স থেকে আসা এভিয়েন ব্র্যান্ডের সফট ড্রিংকস ৫০০ মিলি ৩০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এসব আমদানি ছাড়া দেশে আসার সুযোগ নেই। কিন্তু তারা আমদানির কোনো প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি। কারা এসব তাদের সাপ্লাই করছে, যারা সাপ্লাই করছে তারা সঠিক নিয়মে আমদানি করছে কি না তা আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা করে দেখব।
যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ শফিউর রহমান আরও জানান, যেহেতু হোটেল কর্তৃপক্ষ ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে সে জন্য তাদের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির মামলা হবে। যেসব পণ্য এখানে পাওয়া গেছে সেসব আমদানিযোগ্য। কিন্তু তারা চোরাচালানের মাধ্যমে এখানে এলসি ছাড়া নিয়ে এসেছে। বিকল্পপথে ক্রয় করায় তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা হবে।
এর আগে গত শনিবার রেইনট্রি হোটেলে অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। তবে হোটেলে বেআইনি কিছু পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিলেন সংস্থাটির গুলশান জোনের পরিদর্শক ওবায়দুল কবির। তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অভিযানে আমরা হোটেলের সবকিছু তল্লাশি করেছি। তবে হোটেল থেকে বেআইনি কিছু পাইনি।