সেনানিবাস আইন বেসামরিক নাগরিকদের জন্যই বেশী প্রয়োজন
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : সরকার নতুন করে সেনানিবাস আইন প্রণয়ন করতে যাচেছ। সোমবার মন্ত্রী পরিষদে এর খসড়া প্রস্তাব পাস করেছে। এই সংক্রান্ত বিল সংসদে পাস হওয়ার পর আইন হলে ও আইনটি পাস হলে সেনানিবাস এলাকাগুতোতে ওই আইন কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষ।
সূত্র জানায়, সেনানিবাস আইনটি সামরিক বাহিনীর সদস্য ও বেসামরিক নাগরিকদের প্রযোজ্য হলেও বেশিরভাগ সময়ই তা প্রয়োজন হয় বেসামরিক নাগরিকদের জন্য। কারণ তারা অনেকেই আইন অমান্য করেন। তখন এটা প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয়। আবার কেউ কেউ আইন সম্পর্কে জানেও না। এই কারণেও কোন কোন ক্ষেত্রে আইন ভঙ্গ হয়। সামরিক বাহিনীর সদস্যরা আইন মেনে চলে। কেউ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ যেমন রয়েছে এর পাশাপাশি সেনানিবাস আইনেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু বেসরকারি ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সেনানিবাস আইনেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, সেনানিবাস আইন-২০১৭ খসড়া প্রস্তাব মন্ত্রী পরিষদে পাস করার বিষয়টি এখনও পুরোপুরি সেনাবানিবাসের উর্র্ধ্বতন কর্মকতাসহ অনেকেই জানেন না। এই কারণে নতুন আইনে পুরনো কী কী বাদ দেওয়া হয়েছে ও নতুন কী কী বিষয় সম্পৃক্ত হয়েছে তা এখনও তাদের পক্ষে জানা সম্ভব হয়নি। এছাড়া তারা বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানবেন সংসদে বিল উত্থাপন হলে ও আইন পাস হলে। আইনটি পাস হওয়ার পর এই ব্যাপারে সেনানিবাস কর্তৃপক্ষ আইনটি বাস্তবায়ন করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমান সেনানিবাস আইন (ক্যান্টনমেন্ট অ্যাক্ট) ৯৪ বছরের পুরনো। নতুন আইন না হওয়া পর্যন্ত পুরোনো আইন অনুযায়ীই চলবে। নতুন আইন করা হলেও তা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত বলা সম্ভব হবে না, কী কী পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হবে। এর পাশাপাশি নতুন করে কোন স্টেক হোল্ডারকে সম্পৃক্ত হতে হবে কিনা। আইন হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, সেনানিবাস আইনটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সেনাবানিবাস এলাকায় বেসরকারি লোকজন থাকেন। তারা বিভিন্ন স্থাপনাও তৈরি করেন। তাদের গাড়ি চলাচল করে। এছাড়াও বিভিন্ন পেশার মানুষ থাকে। এছাড়াও সামরিক বাহিনীতে যারা কর্মরত থাকেন তাদের অনেকেই অবসরে যাওয়ার পর সেনানিবাস এলাকায় থাকেন। তখন তাদের জন্যও বেসামরিক মানুষের মতো সব নিয়ম কানুন মানতে হয়। সেনানিবাস এলাকায় বেসরকারি লোকজন থাকার কারণে সেখানকার জন্য আইন প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয় মাঝে মাঝেই।
বেসামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য এই আইন প্রযোজ্য কিনা জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এটা সেনানিবাসে যারা থাকবেন সবার জন্যই প্রযোজ্য। তবে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা আইন অমান্য করে এমন নজির কম। এই কারণে তাদের বেলায় ওই ভাবে প্রয়োজন হয় না। বেসরকারি ব্যক্তিদের জন্য বেশি প্রযোজ্য হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম বলেন, ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকা এক ধরনের পৌর ব্যবস্থাপনার মত। অর্থাৎ পৌরসভা যেভাবে তাদের এলাকা ম্যানেজ করে, এটাও সেভাবে ম্যানেজ করবে। বোর্ডের কার্যক্রম কেমন হবে তা এই আইনে বলা আছে।
নতুন আইনের খসড়ায় ৯০ বছর আগে যেসব জরিমানা নির্ধারণ করা ছিল সেগুলোর পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। ৪৩টি বিষয়ে আর্থিক জরিমানার বিধান বাড়ানো হয়েছে। শফিউল আলম আরও বলেন, কোনো অপরাধ কোনো নির্দিষ্ট ধারায় না এলে আগের আইনে ২০০ টাকা জরিমানা করার সুযোগ ছিল। প্রস্তাবিত আইনে ওই বিধান বাদ দিয়ে বিভিন্ন অপরাধের জন্য জরিমানার পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।