আন্তর্জাতিক আদালতে কুলভূষণ মামলায় ভারতের বক্তব্য শোনা হলো
আশিস গুপ্ত, নয়াদিল্লি : আন্তর্জাতিক আদালতে মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই কুলভূষণ যাদবের মৃত্যুদ- কার্যকর করতে পারে পাকিস্তান। গতকাল সোমবার হেগ শহরে আন্তর্জাতিক আদালতে এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন বিশিষ্ট আইনজীবী হরিশ সালভে। পাকিস্তানে সাজাপ্রাপ্ত ভারতীয় নৌসেনার প্রাক্তন কর্মী কুলভূষণ যাদবের মৃত্যুদ- রদ করা নিয়ে ভারতের অভিযোগের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক আদালতে গতকাল সোমবার শুনানি শুরু হয়েছে। এদিন শুনানিতে প্রথমে ভারতের বক্তব্য শোনা হয়। ভারত প্রথমেই পরিষ্কার করে জানিয়েছে, গোপনে কুলভূষণের শুনানি চলেছে সেনা আদালতে। সেই সেনা আদালতই কুলভূষণকে মৃত্যুদ- দিয়েছে। ভিয়েনা সম্মেলনের চুক্তির পরিপন্থী পাক সিদ্ধান্ত। প্রথমত, বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও কুলভূষণের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি ভারতীয় দূতাবাস কর্মকর্তাকে। দ্বিতীয়ত, কুলভূষণের সঙ্গে দেখা করার জন্য তার পরিবারকে ভিসা দেয়নি পাকিস্তান। ভারতের হয়ে সওয়াল শুরু করেন আইনজীবী ভিডি শর্মা। এরপরেই যুক্তি তুলে ধরেন আইনজীবী হরিশ সালভে। তিনি সরাসরি যাদবের মৃত্যুদ- রদের দাবি করেন। তার কথায়, যাদবের বিরুদ্ধে পাকিস্তান যে চরবৃত্তির অভিযোগ করেছে তা ভিত্তিহীন। ভুলভাবে তাই প্রচার করে চলেছে। মানবিক সমস্ত অধিকার থেকে যাদবকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তার মানবাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সেনা হেফাজতে কুলভূষণের অবস্থা কেমন তা নিয়েও তথ্য দেওয়া হয়নি। ভারতের আরও আশঙ্কা, আন্তর্জাতিক বিচারালয়ে মামলার মীমাংসার আগেই তাকে ফাঁসি দিতে পারে পাকিস্তান। এর আগে কুলভূষণ যাদবের পক্ষে সওয়াল করেন ড. দীপক মিত্তলের নেতৃত্বে ভারতীয় প্রতিনিধিরা। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরের পিস প্যালেসে শুরু হয় শুনানি। দু’?দফায় শুনানিতে ভারতীয় সময় দুপুর দেড়টা থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত যুক্তি তুলে ধরে ভারত সরকার ও কুলভূষণ যাদবের আইনজীবীরা। ৩ ঘণ্টার বিরতির পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত যুক্তি দেবে পাকিস্তান। এরপরেই রায় ঘোষণা করতে পারে আন্তর্জাতিক আদালত।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৮ বছর পর আবার কোনো মামলা নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে মুখোমুখি ভারত এবং পাকিস্তান। এর আগে ১১৯৯ সালের ১০ আগস্ট পাকিস্তানের নৌসেনাকে সাহায্যকারী আটল্যান্টিক বিমান গুজরাটের কচ্ছে গুলি করে নামায় ভারত। বিমানে থাকা নৌসেনার ১৬ কর্মীরই মৃত্যু হয়।