মন্ত্রিসভায় রদবদল : পূর্ণমন্ত্রী হওয়ার আলোচনায় তারানা ও পলকের নাম
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : নির্বাচনি প্রস্তুতির পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রধান আলোচ্য বিষয় মন্ত্রিসভার রদবদল। কার পদন্নোতি হচ্ছে কে বাদ পড়ছেন এবং কার দফতর ভাগ হচ্ছে? এনিয়ে সরব চারদিক। এরমধ্যে পূর্ণ মন্ত্রীর তালিকায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নাম আলোচনায় রয়েছে।
আওয়ামী লীগ দলীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গত ৮ মে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মন্ত্রিসভার রদবদলের ইঙ্গিত দেন। তবে কবে রদবদল হবে এবং কারা পদোন্নতি পাবেন এ নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি বলেছেন, বিষয়টি নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের উপর।
এই প্রতিবেদককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কাদের বলেছেন, নির্বাচনের আগে অবশ্যই মন্ত্রিপরিষদের রদবদল হবে। যারা ভালো কাজ করেছেন তারা অবশ্যই পুরস্কার পাবেন। প্রতিমন্ত্রীদের মধ্য থেকে কেউ পূর্ণমন্ত্রী হবেন কি না এ প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, পেতেও পারেন। সবই নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের উপর।
আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, মন্ত্রিসভায় রদবদল হবে এ বছরই। এবার খুব হিসাব নিকাশ করে মন্ত্রিপরিষদে রদবদল করা হবে। প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে কেউ কেউ পদোন্নতি পাবেন। আর যাদের কর্মকা-ে সমস্যা রয়েছে এবং অভিযোগ রয়েছে তাদের মধ্য থেকে কেউ দফতরহীন হবে। আর যদি জাতীয় পার্টির মন্ত্রীরা পদত্যাগ করেন তাহলে নতুন মুখ আসতে পারে মন্ত্রিসভায়। তারানা হালিম ও জুনায়েদ আহমেদ পলকের পূর্ণ মন্ত্রীর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি ইঙ্গিত করেন। তিনি জানান, দায়িত্ব পাওয়ার পর এই দুই প্রতিমন্ত্রী যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট রয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি ম-লীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ বলেন, মন্ত্রিসভার রদবদল প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। রদবদলে অনেকেই পদোন্নতি পান। এবারও তাই হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কাছে মন্ত্রীদের সবার কাজের ফিরিস্তি রয়েছে।
আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারানা হালিম ও পলকের কাজে সন্তুষ্ট প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। জয় একাধিকবার দুটি মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেছেন। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীও এই দুই মন্ত্রীর কাজে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন সময়। এই দুইজন প্রতিমন্ত্রীকে স্ব স্ব মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে আলোচনা রয়েছে। এছাড়া নতুনদের মধ্যে দুই জনকে এই দুই মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলেও আলোচনা করছে।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর গঠিত বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভায় প্রথম ও সর্বশেষ রদবদল করা হয়েছিল ২০১৫ সালের জুলাইতে। দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে স্থানীয় সরকার থেকে সরিয়ে জনপ্রশাসনের মন্ত্রী করা এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে দেয়া হয় এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। সেই সময় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানকে পূর্ণ মন্ত্রী করা হয়। নতুন করে মন্ত্রী করা হয় নুরুল ইসলামকে, তারানা হালিম ছাড়াও ও নূরুজ্জামান আহমেদকে প্রতিমন্ত্রী করা হয়। ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই তারানা হালিমকে এই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয়। আর জুনাইদ আহমেদ পলক তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ২০১৪ সালে। নিয়ম অনুযায়ী এই দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।