ঝিনাইদহের জঙ্গি আস্তানায় অভিযান সমাপ্ত
সুলতান আল একরাম, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চুয়াডাঙ্গা গ্রামের ২ বাড়ির জঙ্গি আস্তানায় অভিযান সমাপ্তি ঘোষণা করেছে র্যাব। গতকাল বুধবার বেলা ১২ টার দিকে ঝিনাইদহ র্যাব ক্যাম্পে প্রেস ব্রিফিং করে এ ঘোষনা দেন র্যাবের মিডিয়া উইং প্রধান মুফতি মাহমুদ খান।
গতকাল বুধবার সকাল পৌনে ৯টা থেকে ২য় দিনের মত র্যাব এ অভিযান শুরু করে র্যাব। ঘটনাস্থল থেকে ২শ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা বলবৎ ছিল। র্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা আসার পর জঙ্গি আস্তানা থেকে উদ্ধার ২টি সুইসাইডাল ভেস্ট ও ১টি এন্টি মাইন বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এর পরপরই অভিযান শেষ করা হলো বলে মৌখিকভাবে ঘটনাস্থল থেকে জানানো হয়।
মুফতি মাহমুদ খান জানান, সোমবার রাতে বিশেষ অভিযানে সেলিম ও প্রান্ত নামের দুজনকে আটক করে র্যাব। পরে তারা তথ্য দেয় কয়েকজন জঙ্গি বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকসহ চুয়াডাঙ্গা গ্রামে আত্মগোপন করে আছে। এরই ভিত্তিতে মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই এলাকায় অভিযানে যায় তারা।এসময় ঝিনাইদহের মহেশপুরে জঙ্গি আস্তানার অভিযানে নিহত তুহিনের ভাই সেলিম এবং চাচাতো ভাই প্রান্তের দুটি বাড়ি ঘিরে রাখা হয়। পরে মঙ্গলবার সকালে খুলনা থেকে বোম ডিসপোজাল ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর অভিযান শুরু করে। অভিযানের শুরুতেই একটি বাড়ির বাঁশ বাগানে মাটির নিচ থেকে ২টি সুইসাইডাল ভেস্ট ও পিভিসি সার্কিট বোর্ড ১৮৬ টি, নিওজেল ১৮ টি, এন্টি মাইন ১ ও বোমা তৈরির রাসায়নিক কেমিকেল ৪ ড্রাম। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আলো স্বল্পতার কারণে ওই দিনের মত অভিযান স্থগিত করা হয়। পরে গতকাল সকাল পৌনে ৯ টার দিকে ঢাকা থেকে আসা র্যাবের বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট, কমান্ডো বাহিনী আবারো অভিযান শুরু করে। আড়াই ঘণ্টাব্যাপী চলা এ অভিযানে বিস্ফোরণের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করা হয় উদ্ধার হওয়া ২ টি সুইসাইডাল ভেস্ট ও এন্টি মাইন। পরে অভিযানের সমাপ্তি টানা হয়। বেলা ১২ টার দিকে ঝিনাইদহ র্যাব ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এ অভিযানের সমাপ্তি ঘোষনা করেন মুফতি মাহমুদ খান।
প্রসঙ্গত, গত ৭ মে মহেশপুর উপজেলার এসবিকে ইউনিয়নের বজরাপুর গ্রামে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়ি সারারাত ঘিরে রাখার পর অভিযানে গেলে আব্দুল্লাহ নামের এক জঙ্গি আত্মঘাতি বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয় এবং পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে তুহিন নামের এক জঙ্গি নিহত হয়।
এ সময় সিটিটিসি এর এডিসি নাজমুল হাসান, এসআই মুজিবুর রহমান ও এসআই মহাসিন জঙ্গিদের গুলিতে আহত হয়। এ সময় পুলিশ জঙ্গি আস্তানার বাড়ির মালিক নব্য জেএমবির সদস্য জহুরুল ও তার ছেলে জসিমকে আটক করে। এর পর বিকালে ওই বাড়ি থেকে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) সদস্য বাড়ি থেকে বিস্ফোরক,পিস্তল, গুলি উদ্ধার করে। ঐ অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘সাটল স্পিল্ট’। একই দিন সদর উপজেলার লেবুতলা গ্রামে মৃত শরাফত হোসেনের বাড়িতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। এ সময় তার শরাফত হোসেনের ছেলে নব্য জেএমবির সমন্বয়ক শামিমকে আটক করে। এর আগে গত ২২ এপ্রিল ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামের ঠনঠনেপাড়ায় জাঙ্গী আস্তানায় পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি নব্য জেএমবির নেতা আব্দুল্লাহর বাড়ি ঘিরে রাখে। এর পর অভিযান শেষে রাসায়নিক ভর্তি ২০টি কন্টেনার, ১টি পিস্তল, ১টি ম্যাগজিন, ৭ রাউন্ড গুলি, বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করে। ঐ অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘সাউথ প’। সম্পাদনা: মুরাদ হাসান