পদবঞ্চিতরাই সভা প-ের মূল কারণ, মনে করছে তৃণমূল নেতৃত্বের প্রতিযোগিতার কারণেই কর্মিসভায় সংঘর্ষ, দাবি বিএনপির নেতাদের
কিরণ সেখ : নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা ও দলের আধিপত্য বিস্তারের জন্য কর্মিসভাগুলোতে সংঘর্ষ, হাতাহাতি ও মারামারি হচ্ছে বলে মনে করছেন বিএনপির শীর্ষস্থানীর নেতারা। তবে ত্যাগী ও যোগ্য নেতাকর্মীরা কমিটিতে পদ না পাওয়ায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে মনে করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। গত মঙ্গলবার নগরীর পাঠানপাড়া এলাকায় উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারে রাজশাহী জেলা বিএনপির প্রতিনিধি সম্মেলনে জেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু ও সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত ২ মে চট্টগ্রাম উত্তর এবং ৩ মে দক্ষিণের কর্মিসভা দলীয় কোন্দলের কারণে মারামারিতে প- হয়ে যায়। গত সোমবার রাতে চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা নেতাকর্মীদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। চট্টগ্রাম বিএনপির কর্মিসভা দলীয় কোন্দলের কারণে মারামারিতে প- হয়ে যায়। এই কোন্দল মেটাতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং আমান উল্লাহ আমানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ঢাকা জেলা বিএনপির কর্মিসভা প- হয়ে যায়।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির তৃণমূলের কয়েকজন নেতা বলেন, যারা গত আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছে, যারা রাজপথে থেকে কাজ করেছেন তারা কেউ নতুন কমিটিতে পদ পায়নি। মূলত এ কারণে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা কর্মিসভাগুলো প- করে দিচ্ছে।
তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন মনে করেন, কর্মিসভাগুলোতে নিজেদের আধিপত্য দেখাতে এবং বড় ধরনের শোডাউন করতে এই ঘটনাগুলো ঘটছে। আর যেকোনো বড় রাজনৈতিক দলে এগুলো ঘটে থাকে। আর বিএনপিও দেশের একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল, তাই কর্মিসভাগুলোতে এ ঘটনাগুলো ঘটছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, দু-একটি জায়গায় নেতৃত্বের প্রতিযোগিতার কারণে হয়তো এগুলো হচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ জায়গায় সরকারের ইন্ধনে এগুলো হচ্ছে। কারণ তারা (সরকার) কর্মিসভা করতে দিতে চায় না।
ঢাকা জেলা কর্মিসভায় দলনেতা ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ঢাকা জেলা প্রতিনিধি সভায় প্রচুরসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। তারা অনেক উজ্জীবিত ছিলেন। এটা দেখে আমার মনে হয়েছে, ঢাকা জেলা খুবই শক্তিশালী। এছাড়া অনুষ্ঠান চলার সময় তারা বিভিন্ন নেতার নামে সেøাগান দিচ্ছিলো। সুতরাং আমার মনে হয়, বিএনপির কোনো নেতাকর্মী এ ধরনের কাজ করেননি। এর কারণ, তারা (সংঘর্ষকারীরা) এসেই মাইকের তার ছিঁড়ে ফেলে, তাই আমার ধারণা, কোনো একটি বিশেষ মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই কাজ করেছেন।
তবে রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফা বলেন, আমার শোনা কথা, দলে পদ না পাওয়া নেতাকর্মীরা ‘পদবঞ্চিতরা’ কর্মিসভায় মারামারি করেছে। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ