১৫ বার সশস্ত্র হামলার শিকার শেখ হাসিনা সুরাহা হয়নি কোন মামলার
বিপ্লব বিশ্বাস : ১৯৮১ সালের ১৭ই মে দেশে এসে আওয়ামী লীগের হাল ধরার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র হামলা করা হয়েছে ১৫ বার। আর হত্যার জন্য ষড়যন্ত্র করা হয়েছে ৫ বার। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা চালানো হয় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে। এসব হামলায় মামলাও হয়েছে বেশ কয়েকটি। কিন্তু এখনো কোন মামলার সুরাহা হয়নি। মহানগরী দায়রা জজ আদালতের প্রধান কৌসুলী বলছেন, তদন্তকারী সংস্থার গাফিলতি এর মূল কারণ।
১৯৮১ সালের ১৭ই মে দেশে ফেরার পর থেকেই স্বাধীনতা বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে সক্রিয় হয়ে ওঠে। শুধু ঢাকাতেই তার ওপর সশস্ত্র হামলা চালানো হয় ৭ বার। এর মধ্যে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর সচিবালয়ের সামনে তার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। মারা যায় আওয়ামী লীগ কর্মী নূর হোসেন। ১৯৮৯ সালের ১১ আগষ্ট ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনে হামলা করে ফ্রিডম পার্টি। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ধার্য রয়েছে। ১৯৯১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর উপ-নির্বাচন চলাকালে গ্রীন রোডে ও ১৯৯৫ সালের ৭ই ডিসেম্বর ধানমন্ডির রাসেল স্কোয়ারে জনসমাবেশে গুলিবর্ষণ করা হয়। এরপর ১৯৯৬ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বক্তৃতা দেয়ার সময় মাইক্রোবাস থেকে সভা মঞ্চ লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা নিক্ষেপ করা হয়। ২০১৫ সালের ৭ই মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভায় যাওয়ার পথে কাওরান বাজারে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় জেএমবি। আর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা চালানো হয় ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে। সেখানে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেলেও মারা যায় আওয়ামী লীগের ২৪ নেতাকর্মী। আলোচিত এ মামলাটি তদন্ত কর্মকর্তার জেরা চলছে।
ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি, ঈশ্বরদীতে ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় হামলা চালানো হয় ২০০০ সালের ২০ জুলাই। এ মামলাটি আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ধার্য রয়েছে। খুলনায় ২০০১ সালের ২৯ মে, একই বছর ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেটে, ২০০২ সালের ৪ মার্চ নওগাঁয়, ওই বছর ৩০ আগষ্ট সাতক্ষীরার কলারোয়ায় এবং ২০০৪ সালের ২ এপ্রিল বরিশালে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র হামলা করে হুজি, জেএমবি, জামায়াত ও বিএনপি।
সবশেষ গতবছরের ২৭ ডিসেম্বর হঙ্গেরি যাওয়ার পথে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানে ইঞ্জিনে ত্রুটি দেখা দেয়। বর্তমানে মামলাটি তদন্তধীন রয়েছে। এসব হামলায় ঢাকায় মামলা হয়েছে বেশ কয়েকটি। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এখনো কোন মামলারই সুরাহা হয়নি। মহানগরী দায়রা জজ আদালতের প্রধান কৌসুলী বলছেন, তদন্তকারী সংস্থার গাফিলতি এর মূল কারণ। আর মামলার সুরাহা না হওয়ার পেছনে সরকারের ব্যর্থতাকেও দায়ি করছেন আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ