সাংবাদিকদের নজরদারি করে কিছু করা যায় না : ড. গোলাম রহমান
সাংবাদিকদের নজরদারি করে কিছু করা যায় না, করা সম্ভবও নয়। সাংবাদিকরা যা করার তা তো করবেনই। এখন প্রশ্ন হচ্ছেÑ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশ সফরে যাওয়া সাংবাদিকদের উপর নজর রাখার চিন্তা কেন করল? এখানে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে এমন কিছু হলে সেটা ভিন্ন প্রশ্ন। তাই বলে তো সব সাংবাদিকই বিদেশে গিয়ে সরকার বা দেশের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধাচরণ করবেন, এটা তো সঠিক নয়। কোনো সাংবাদিক যদি অসৎ উদ্দেশ্যে বিদেশে গিয়ে কোনো অপতৎপরতা দেখান, দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হন সেক্ষেত্রে সেটা আলাদা একটা ব্যাপার। কিন্তু বিদেশ সফর গিয়ে সাংবাদিকরা কে কী করছেন তা জানা বোধহয় খুব একটা যৌক্তিক নয়। এটা এক অর্থে সংবাদপত্রের উপরে এক ধরনের চাপ, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উপরে চাপ, সাংবাদিকতা পেশার জন্যও সুখকর কিছু নয়, মানে প্রফেশনাল এটিচিউড নয়। তাই ঢালাওভাবে সব সাংবাদিকের উপর নজরদারি করা উচিত নয়। যদি কোনো সাংবাদিক দেশের বিরুদ্ধাচরণ করেন বা করতে চান এমন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় তাহলে আলাদাভাবে তাদের নজরদারি করতে পারে। কিন্তু সাংবাদিকরা বিদেশ গেলে তাদের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক মিশনের লেগে থাকতে হবে এটা অযৌক্তিক একটা বিষয়। আমি মনে করি, মুক্ত সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এটা একটা বড় বাধা।
সাংবাদিকতা পেশার একটা স্বাধীনতা আছে। আমাদের সংবিধানেও সাংবাদিকতার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। সেখানে এ ধরনের সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। তবে কোনো সাংবাদিক যদি খারাপ কিছু করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু তা না করে বিদেশ সফর করা দেশীয় সাংবাদিকদের নজদারিতে রাখা স্বাধীন সাংবাদিকতার সঙ্গে যায় না।
পরিচিতি: অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মতামত গ্রহণ: তানভীন ফাহাদ, সম্পাদনা: আশিক রহমান