শ্বশুর-জামাতার দ্বন্দ্বে ভাঙচুর মামলায় গ্রেফতার ভূমিমন্ত্রীর ছেলে
কলিট তালুকদার (পাবনা প্রতিনিধি) : পাবনার ঈশ্বরদীতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের বিশ্বাসের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় ভূমিমন্ত্রীর ছেলে শিরহাস শরীফ তমালসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পাবনা-৪ আসনের এমপি ও ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর সাথে তার জামাতা ঈশ্বরদীর পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদের অনেকদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছে। এরই জের ধরে গত বৃহস্পতিবার বিকালে ১০/১৫ জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী ঈশ্বরদী পৌর সদরে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। এ সময় মন্ত্রীর জামাতা আবুল কালাম আজাদের মিষ্টির দোকান এবং বেশকিছু সাধারণ ব্যবসায়ীর দোকানসহ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের বিশ্বাসের বাড়িতেও ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। এসময় বাধা দিতে গেলে তাদের মারধরে ছাত্রলীগ সভাপতির মা হাজেরা বেগম আহত হন।
পুলিশ জানায়, হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগ সভাপতি জুবায়ের বিশ্বাসের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার বিশ্বাস বাদি হয়ে ঈশ্বরদী থানায় গতরাতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ভূমিমন্ত্রীর ছেলে শিরহান শরীফ তমালকে ১ নাম্বার ও যুবলীগ নেতা রাজিব সরকারকে ২ নাম্বার আসামি করা হয়। এরপর রাতেই অভিযানে নামে ঈশ্বরদী ও পাবনা পুলিশের একটি যৌথ টিম। তারা বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে হামলার সাথে জড়িত অভিযোগে ভূমিমন্ত্রীর ছেলে শিরহান শরীফ তমালসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত সকলেই যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে জানা যায়। আসামিদের দুপুরের দিকে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক আবু বাছেদ মো. ভুলু মিয়া আসামিদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
এদিকে ঈশ্বরদী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের বিশ্বাস তার মায়ের ওপর এমন সন্ত্রাসী আক্রমণের বিষয়ে দলীয় প্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
আর ঈশ্বরদী পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ মিন্টু বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারছি না। আমার প্রতিপক্ষরাই এই কাজ করেছে। আমার ব্যক্তিগত কার্যালয় ও একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানেও হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। থানায় অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয় না, তাই অভিযোগ দেবে না বলেই জানান তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত রাজিব বলেন, আমাদের লোকজন পাবনায় আদালতে হাজিরা দিতে গেলে জুবায়ের বিশ্বাসের লোকজন হামলা করে, এ কারণে কতিপয় ছেলে এই কাজ করে। তবে আমাকে এই ঘটনার সাথে জড়ানোর প্রশ্নই আসে না। আমি এই কাজের সাথে জড়িত নই। জুবায়ের বিশ্বাসের সাথে পূর্ব বিরোধ থাকায় তারা আমাকে এই ঘটনার সাথে জড়ানোর চেষ্টা করছে বলে দাবি রাজিবের। তিনি বলেন, যতো কিছুই হোক, একজন মায়ের শরীরে হাত দিয়ে তাকে আহত করবো এমনটা চিন্তা করি না। পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ