পরাগ মাঝি : যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সূচকে ২০১৭ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ সম্পূর্ণ বিপদমুক্ত না হলেও প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে। বার্ষিক প্রতিবেদনটিতে এবার বাংলাদেশ বিষয়ে নব্য জেএমবি, আইএস নামধারী জঙ্গিদের উত্থান, ব্লগার হত্যা এবং ধর্মীয় উস্কানির মাধ্যমে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনাসমূহ উল্লেখ করা হয়েছে। সূচক তালিকায় সবচেয়ে বিপদজনক অবস্থান তথা প্রথম স্তরে রয়েছে ১৬টি দেশ। দ্বিতীয় স্তরে তালিকাভুক্ত হয়েছে আরও অন্তত ১২টি রাষ্ট্র। আর ওই দুই স্তরের বাইরে বিপদসীমার কাছাকাছি প্রথম রাষ্ট্রটিই বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ বিষয়ে করণীয় হিসেবে প্রতিবেদক সংস্থা ‘ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলেজিয়াস ফ্রিডম’ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছে। এসব সুপারিশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশকে প্রযুক্তি সহায়তাসহ জাতীয় সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিটকে শক্তিশালী করা। ধর্মীয় বিভাজন তৈরি করে প্রকাশ্যে এমন বক্তব্য যেন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশি সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোকে পরামর্শ দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এছাড়াও বলা হয়েছেÑ বাংলাদেশি স্থানীয় সরকার, পুলিশ বিভাগ এবং বিচারকদের উন্নত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।
ধর্মীয় স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশ বিষয়ে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গও এসেছে। মায়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে চাপ প্রয়োগের কথাও উল্লেখ আছে। তবে রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেন্দ্র করেই ধর্মীয় স্বাধীনতা সূচকে সবচেয়ে বিপজ্জনক রাষ্ট্রসমূহ তথা প্রথম স্তরের নেতৃত্বে রয়েছে মায়ানমার। এই স্তরে থাকা অন্য রাষ্ট্রগুলো হলোÑ সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, চীন, ইরিত্রিয়া, ইরান, নাইজেরিয়া, উত্তর কোরিয়া, পাকিস্তান, রাশিয়া, সৌদি আরব, সুদান, সিরিয়া, তাজিকিস্তান, তুর্কেমিনিস্তান, উজবেকিস্তান এবং ভিয়েতনাম। আর দ্বিতীয় স্তরে থাকা রাষ্ট্রসমূহ হলোÑ আফগানিস্তান, আজারবাইজান, বাহরাইন, কিউবা, মিসর, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, কাজাখস্তান, লাওস, মালয়েশিয়া ও তুরস্ক।
এছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকা রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও রয়েছেÑ বেলারুশ, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, কিরগিজিস্তান, ম্যাক্সিকো, নেপাল ও সোমালিয়া।
প্রতিবেদন প্রসঙ্গে ‘ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলেজিয়াস ফ্রিডম’র প্রধান থমাস রিজ বলেন, ‘কমিশন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, রাষ্ট্রসমূহ আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আরও গভীর এবং ব্যাপক বিস্তৃতভাবে লঙ্ঘন করছে।’