ইন্টারপোলের গ্রেফতার এড়াতে সৌদি নাগরিকত্ব জাকির নায়েকের
সাজ্জাদুল হক : বহুল আলোচিত, সমালোচিত ইসলামি চিন্তাবিদ ডা. জাকির নায়েককে নাগরিকত্ব দিয়েছে সৌদি আরব। শুক্রবার মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। মিডল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, ইন্টারপোলের হাত থেকে জাকির নায়েককে রক্ষা করতে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ নিজে এগিয়ে আসেন এবং তার নাগরিকত্ব অনুমোদন করেন। গত মাসে সন্ত্রাসবাদে মদদ ও অর্থ পাচারের অভিযোগে দ্বিতীয়বারের মতো জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ভারত। ডা. নায়েককে গ্রেফতারে রয়েছে ইন্টারপোলের নোটিস। অভিযোগ আছে তিনি উগ্রবাদ ছড়িয়ে দিচ্ছেন। ভারতে সন্ত্রাসী কর্মকা-ে অর্থায়ন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আছে মামলা।
ঢাকার গুলশানে গতবছর জুলাইয়ে জঙ্গি হামলায় জড়িতদের মধ্যে অন্তত দুজন জাকির নায়েকের মতো ইসলামি বক্তাদের অনুসরণ করতেন বলে অভিযোগ ওঠার পর নতুন করে আলোচনায় আসেন মহারাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া এই টিভি বক্তা। জাকির নায়েকের কিছু বক্তব্যকে জঙ্গিবাদের প্রতি তার সমর্থন হিসেবে চিহ্নিত করেন অনেকে। তরুণদের মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসে ভেড়ানোর অভিযোগে তার এক সহযোগিকে গ্রেফতার করে ভারতীয় পুলিশ।
ভারতের কয়েকজন মুসলমান প-িত জাকির নায়েককে ‘সৌদি আরবের পৃষ্ঠপোষকতায় ওহাবি মতবাদ প্রচারকারী’ হিসেবে সন্দেহের চোখে দেখেন। অন্যদিকে সৌদি আরব সরকার তাকে ‘ইসলামের সেবক’ বিবেচনা করে ২০১৫ সালে ‘বাদশাহ ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরস্কার’ দেয়।
মিডল ইস্ট মনিটর বলছে, ভারতের একটি আদালত মুদ্রা পাচারের এক মামলায় গত মাসে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। সে সময় মালয়েশিয়া সফরে ছিলেন ৫১ বছর বয়সী এই টিভি বক্তা। পাঁচ বছর আগে মালয়েশিয়া সরকার দেশটিতে তাকে স্থায়ী বসবাসের অনুমতিও দেয়।
চিকিৎসা শাস্ত্রে লেখাপড়া করা নায়েক বিভিন্ন সময়ে ইসলাম ধর্ম, জঙ্গিবাদ, জিহাদ নিয়ে বক্তব্যের জন্য বিতর্কিত হয়েছেন। নিষিদ্ধ হয়েছেন বিভিন্ন দেশে। গত বছর উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলার অভিযোগে ভারতের কর্নাটক রাজ্যে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়।
১৯৬৫ সালে মুম্বাইয়ে জন্ম নেওয়া জাকির নায়েক কিষানচাঁদ চেলারাম কলেজের পর টোপিওয়ালা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে মেডিসিন বিষয়ে লেখাপড়া করেন। পরে বিওয়াইএল নায়ার চ্যারিটেবল হাসপাতালেও তিনি লেখাপড়া করেন।
১৯৮৭ সালে ইসলামি বক্তা আহমেদ দিদাতের সংস্পর্শে আসেন নায়েক। এর কয়েকবছর বাদে ১৯৯১ সাল থেকে শুরু করেন ধর্ম প্রচারের কাজ। ভারতের আল্লামা সাইয়্যিদ খালিক সাজিদ বোখারী কয়েক বছর আগে জাকির নায়েকের বিপক্ষে একটি বই লেখার পর বাংলাদেশেও হক্কানি আলেমরা তার সমালোচনায় মুখর হন। সম্পাদনা : সারোয়ার জাহান।