দলের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ আওয়ামী লীগের তৃণমূলে অভিযোগ আর অসন্তোষ
আল হেলাল শুভ : দলীয় এমপি-মন্ত্রী ও কেন্দ্রের ওপর নানা অভিযোগ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগের তৃনমূল নেতারা। দলের মধ্যে জামায়াতের অনুপ্রবেশের অভিযোগও তোলেন তারা। গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের বর্ধিত সভায় জেলা পর্যায়ের নেতারা এমন অসন্তোষ প্রকাশ করেন।সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি ঢাকা থেকে দেওয়ার বিষয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। সভায় দলের ভেতরে বিভিন্ন অসঙ্গতি, এমপি-মন্ত্রীদের সঙ্গে নেতাকর্মীদের দূরত্ব নিয়েও নানা অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। সভায় উপস্থিত একাধিক নেতা এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
সভায় দলের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়ে খুলনা জেলার সভাপতি হারুন উর রশীদ বলেন,বিরুদ্ধে যদি আমিও যাই, আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি ঢাকায় বসে দেওয়ায় অন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, দলের স্পোকসম্যান (মুখপাত্র) যাতে একজন হয়। বেশি লোক দলীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বললে আমরা বিব্রত হই।
দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে রংপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাঝে মধ্যে এমন কথা বলেন, তখন আমরা ভীত হয়ে পড়ি। দল বুঝি আর ক্ষমতায় আসবে না। তাছাড়া উনার বক্তব্যে দলীয় বিভেদ স্পষ্ট হয়ে উঠে। দলীয় এমপিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তিনি বলেন, এমপিরা নির্বাচিত হয়ে বলয়ের বাইরে যেতে পারেন না। আর বলয়ের কারণে অমুককে তমুককে দিয়ে কমিটি দেওয়া হয়। জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের পতাকাতলে সমবেত হয়। তারা কাদের ছত্রছায়ায় আওয়ামী লীগের ঢুকছে সেটা তদন্ত করে দেখারও দাবি জানান তিনি।
ময়মনসিংহ জেলার সভাপতি জহিরুল হক খোকা বলেন, আওয়ামী লীগের রন্ধ্রে, রন্ধ্রে খোন্দকার মোশতাক ঢুকে গেছে। শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের একদল আপনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছি, আরেক দল আপনাকে পেছনের দিকে টানছে।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরুদ্দিন আহমেদ কামরান বলেন, গত নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে এমপিদের সঙ্গে সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীদের ফারাক তৈরি হয়েছে। বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ দলের ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলেন।
এমপিদের সঙ্গে সংগঠনের নেতাকর্মীদের সৃষ্ট দূরত্ব কাটিয়ে তুলতে শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোসলেম উদ্দিন। দলের স্পোকসম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, স্পোকসম্যানের কথায় আমরা যদি বিভ্রান্ত হই তাহলে দলের আরও ক্ষতি হবে।
সবার কথা শুনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার তাগিদ দেন। পেশিশক্তি বাড়াতে জামায়াতের কাউকে ঢোকানোর বিষয়েও হুঁশিয়ার করে দেন তিনি। সম্পাদনা-হুমায়ুন কবির খোকন