পানি সংকট-বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে বিপন্ন লক্ষ্মীপুরের জনজীবন
জহিরুল ইসলাম শিবলু,লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুরে পানি সংকট, বিদ্যুতের লোডশেডিং ও তীব্র গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। লক্ষ্মীপুর পৌরসভার প্রায় তিন হাজার গ্রাহক গত এক সপ্তাহ ধরে পানি পাচ্ছেন না। তীব্র পানি সংকটে সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে খাওয়ার জন্য বাজার থেকে বোতলজাত পানি কিনে খেতে হচ্ছে। বাসা-বাড়িতে রান্না করতে না পেরে হোটেল থেকে খাবার কিনে খেতে হচ্ছে তাদের। বিদ্যুৎ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০-১২ বারেরও বেশি হচ্ছে লোডশেডিং। দিন কিংবা রাত, লোডশেডিংয়ের কাছ থেকে রেহাই নেই। আধাঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলে, আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা দেয়া হয় লোডশেডিং। গত এক মাস ধরে লক্ষ্মীপুর জেলা জুড়ে দিনে-রাতে বিদ্যুতের এ অবস্থা। এ ছাড়া জ্যৈষ্ঠের এই তীব্র গরমে জন-জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভা সূত্র জানা যায়, লক্ষ্মীপুর পৌরবাসীর সুপেয় পানি সংকট নিরসনে তিনটি ওয়ারটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট চালু আছে। এর মধ্যে রামগতি বাস স্ট্যান্ডের অদূরে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে পৌরসভার তিন ভাগের এক ভাগ পরিবার পানি না পেয়ে অসুবিধায় রয়েছেন। এ ছাড়া লোডশেডিংর কারণে পৌরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডে পানি যথাযতভাবে দেওয়া যাচ্ছে না। এতে বাস টার্মিনাল, বিসিক শিল্পনগরসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাসা-বাড়িতে পানি না থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ভবনের মালিক মানিক মিয়া বলেন, গত এক সপ্তাহ থেকে তার বাড়িতে পৌরসভার সরবরাহ করা পানি পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক দূর থেকে পানি এনে কোনো রকমে দিন কাটছে তাঁদের। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মনশা হাজী বাড়ির গৃহিনী রুমা বেগম বলেন, পানির অভাবে ছোট ছেলে-মেয়েদের গোসল করাতে পারছিনা, এতে করে ডায়রিয়াসহ নানা রোগ বালাই দেখা দিচ্ছে। পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মিনারা মঞ্জিলে বাসিন্দা মিনারা বেগম বলেন, গত এক মাস ধরে পানি সংকটে ভুগছি। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে এক ফোটা পানিও পায়নি। সংরক্ষিত পানি দিয়ে কোনমতে চলছে। খাওয়ার পানি বাজার থেকে কিনে খেতে হচ্ছে। ঘরে ধোয়া-মুছা বন্ধ, চুলায় রান্না বসানো যাচ্ছে না।