বাজেট ২০১৭-১৮ ব্যাংক থেকে সরকার ৪৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেবে
হাসান আরিফ : নির্বাচন সামনে রেখে ভোটার তুষ্টির বাজেট দিতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। যদিও রাজস্ব আদায়ে নেওয়া হচ্ছে উচ্চভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা। কিন্তু নতুন করে জনগণের ওপর করের বোঝা চাপাতে চায় না সরকার। এজন্য আগামী ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে ৪৮ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা ঋণ নিতে চায় সরকার।
মহাজোট সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট আগামী পহেলা জুন জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। যদিও বর্তমান সরকার আরও একটি বাজেট দেবে। তবে সেটি পূর্ণাঙ্গ বাজেট নয়। ফলে আগামী বাজেট হচ্ছে বর্তমান সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। তাই এ বাজেটে আগামী নির্বাচনে ভোটারদের খুশির দিকটি মাথায় রেখেই তৈরি হচ্ছে।
নির্বাচন কেন্দ্রিক বাজেট তৈরি করতে গিয়েই বেশি ঋণ নেওয়ার প্রবণতা রয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট হবে ৪ লাখ ২৮৬ কোটি টাকা। এর সাঙ্গে যোগ হবে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। ফলে মোট বাজেট হবে ৪ লাখ ১০ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা।
জানা গেছে, চলতি ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৩৮ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা। যদিও সংশোধিত বাজেটে এ আকার ২ হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। এর আগের ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৩৮ হাজার ৫২৩ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ২৪ হাজার ১৮২ কোটি টাকা আর স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৪ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা। তার আগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরেও ৩১ হাজার ২২১ কোটি টাকা ল্যমাত্রা ধরা হয়েছিল।
আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হচ্ছে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, বাজেট ঘাটতি আমরা বেশি রাখছি। বেশি রাখলেও কোনো লাভ নেই, পরে বেশি হয় না। বাজেট ঘাটতি ৫ দশমিক ৪ হতে পারে। এর ফলে আগামী অর্থবছরে ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বাড়তে পারে। আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতির হার ধরা হতে পারে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ।
সূত্র মতে, আগামী অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা খাতে ব্যয় বাড়বে ৬ হাজার ৮২০ কোটি টাকা। এজন্য এখন পর্যন্ত সম্ভাব্য ব্যয়ের ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৭ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। এছাড়া ভর্তুকি খাতেও ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত এ বরাদ্দ জিডিপির ১ দশমিক ২ শতাংশ।
জানা গেছে, আগামী বাজেটে ঘাটতি পূরণ করতে ব্যাংকিং ঋণ নেওয়া হবে প্রায় ৪৮ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা এবং ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে ২৫ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। এছাড়া বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা ৫৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ও অনুদান ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং ঋণ পরিশোধে ব্যয় হবে ৭ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা।