সাংবাদিকদের ওপর নজরদারির আদেশ নিয়ে বিব্রত পররাষ্ট্র কর্মকর্তারা
মেসবাহ উল্লাহ শিমুল : বিদেশ ভ্রমণরত সাংবাদিকদের ওপর নজরদারি সংক্রান্ত আদেশ নিয়ে বিব্রত বোধ করছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। আদেশ প্রত্যাহারের তিনদিন পরও বিষয়টি নিয়ে কঠোর সমালোচনা হওয়ায় মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কেউ দায় নিচ্ছেন না। আর কূটনীতিকরা একে পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তাদের অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির ওই দ্বাদশ সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, সংসদ সদস্য মাহজাবিন খালেদ বলেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে অবস্থিত পাকিস্তান হাইকমিশন কিছুসংখ্যক বাংলাদেশি সাংবাদিককে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানায়। এসব সাংবাদিক বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। গণমাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী কথাবার্তাসহ গণহত্যা বিষয়ে ভুল তথ্য দিচ্ছেন। এরপরই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহিঃপ্রচার অনুবিভাগ থেকে একটি আদেশ জারি করা হয়। বিদেশে অবস্থানকালে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাস ও হাইকমিশনকে ওইসব সাংবাদিকদের ওপর নজরদারির নির্দেশনা দেয়া আছে। এরপর গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএই্চ মাহমুদ আলী বলেন, এ সংক্রান্ত সার্কুলারটি আমি দেখিনি। আমি এটা দেখব।’ এ সময় পাশে বসে থাকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দিকে তাকিয়ে সার্কুলারটি দেখতেও চান তিনি। তবে সেসময় কোনো কর্মকর্তাই মন্ত্রীকে সেটি দেখাননি। এর তিনদিন পরই বহিঃপ্রচার অনুবিভাগ থেকে পাঠানো অপর এক আদেশে তা বাতিল করা হয়। এরপর মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা এ বিষয়টিতে বিব্রত বোধ করেন।
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে পাশ কাটিয়ে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আদেশ জারি করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ঢাকার কূটনীতিকরা। তারা বলছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তাদের অদূরদর্শীতাই প্রমাণ করে। এ বিষয়ে সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবির এক প্রতিবেদককে বলেন, গণমাধ্যম গণতন্ত্রের সহায়ক শক্তি। তাই গণমাধ্যমের ওপর এমন কোনো নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা ঠিক না যাতে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি প্রক্রিয়া কিংবা তার স্বাভাবিকতা বাধাগ্রস্ত হয়।