নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : বাংলাদেশ ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির কাছে সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী এলাকায় রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের যুক্তি তুলে ধরেছে। সেই সঙ্গে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য বাংলাদেশ ইউনেস্কোর সহযোগিতা চেয়েছে। তবে এই সহযোগিতা মিলবে কিনা এমন কোনো আশ্বাস এখনো পায়নি বাংলাদেশ। কারণ ইউনেস্কো এর বিরোধিতা করে আসছে।
ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, এই প্রকল্প এগিয়ে নেওয়ার পক্ষে ইউনেস্কোর সমর্থন চেয়েছে বাংলাদেশ। এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী এই সহায়তা চান। তিনি একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে এখন ফ্রান্সের প্যারিসে অবস্থান করছেন। তারা প্যারিসে ইউনেস্কোর সদর দফতরে এক বৈঠকে এই বিষয়ে বাংলাদেশের তরফ থেকে অবস্থান স্পষ্ট করেন এবং বিস্তারিত তুলে ধরেন।
সুন্দরবন রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের সর্বাত্মক চেষ্টার বিষয়ে ওই কমিটিকে পুরোপুরি সংশয়মুক্ত করতে সোমবার বাংলাদেশ দূতাবাসের তরফ থেকে একটি ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিরা এতে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ইউনেস্কোতে ভারতের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি ব্রিফিংয়ে অংশ নেন।
জানা গেছে, এই বছরেই আগামী জুলাইয়ে পোল্যান্ডে এই কমিটির পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সুন্দরবন সংরক্ষণের পরিস্থিতি পরীক্ষা করে দেখা হবে।
ইউনেস্কোর কাছে বাংলাদেশ দাবি করেছে ও জানিয়েছে, বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দবরন। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করা হবে। এই জন্য ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সম্ভাব্য পরিবশেগত ক্ষতি যাতে না হয় এবং ওই ক্ষতির ঝুঁকি এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। তিনি তাদেরকে আরও জানিয়েছেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য আরও বিদ্যুতের প্রয়োজন। তাই বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হবে। সেটা করা হলেও সুন্দরবনের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেটাও দেখা হবে। সেই সঙ্গে এই সুন্দরবন রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব বিষয়ে সতর্ক থেকেই কাজ করা হবে। বাংলাদেশের তরফ থেকে এটাও দাবি করা হয়, সুন্দরবন বাংলাদেশের মূল্যবান সম্পদ। এটা রক্ষা করা সবচেয়ে বড় দায়িত্ব বাংলাদেশের।
ইউনেস্কো মনে করে বাংলাদেশের সুন্দরবনের কাছে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করা হলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতরে যে কয়লা পোড়ানো হবে এতে করে সালফার ডাই অক্সাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং নাইট্রাস অক্সাইড নির্গত হবে। সেটা হলে অ্যাসিড বৃষ্টিও হতে পারে। আর সেটা হলে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়বে।