া ইসমাঈল আনিস
স্ত্রীর সামনে কখনোই সেসকল নারীদের আলোচনা না করা, বিবাহ-উপঢৌকন হিসেবে পিত্রালয় যাদের অনেক ব¯’ মিলেছে। কেননা, এমন আলোচনায় স্ত্রীরা দিলমরা যায় এবং নেহায়েৎই লজ্জিত থাকে। একদিন হযরত আলী (রা.) নিজঘরে স্ত্রী ফাতিমা (রা.)-এর কোলে মাথা রেখে আরাম করছিলেন। হযরত ফাতিমা (রা.)জিজ্ঞেস করলেন, আজ আব্বাজান- আল্লাহর হাবিবের দরবারে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে? হযরত আলী (রা.) বললেন, আজ রাসুল (সা.) পূর্ববর্তী নবী-রাসুলদের আলোচনা করেছেন। হযরত সুলাইমান (আ.)-এর আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, তিনি নিজ কন্যার বিবাহে আশি হাজার দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) উপঢৌকন হিসেবে দিয়েছিলেন। একথা শুনে ফাতিমা (রা.) মনে বড় আঘাত পান, এবং দীর্ঘণ নির্বাক বসে রইলেন; কিছুই বললেন না। একপর্যায়ে আলী (রা.) তার কোলে মাথা রেখেই ঘুমিয়ে পড়লেন। ঘুমের মধ্যে তিনি স্বপ্নে দেখলেন যে, তিনি জান্নাতে পৌঁছে গেছেন। সেখানে হযরত ফাতিমা (রা.)কে এক কারুকার্য খচিত চেয়ারে উপবিষ্ট দেখতে পান। আর অন্যান্য নবীকন্যাগণ তার চতুষ্পার্শ্বে আদবের সঙ্গে দাঁড়ানো ছিল। তিনি ফাতিমা (রা.)-এর কাছে গিয়ে পান করার জন্য পানি চাইলেন। ফাতিমা (রা.) সেসকল দ-ায়মান মেয়েদের মধ্যে একজনকে পানি আনতে বললেন। সে পানি এনে হযরত আলী (রা.)কে দিল। তিনি ফাতিমা (রা.)কে জিজ্ঞেস করলেনে, মেয়েটি কে? জবাবে তিনি বললেন, এ সেই মেয়ে যার উপঢৌকনের কথা বলে আপনি আমাকে খোঁটা দিয়েছিলেন। তখনই হযরত আলী (রা.)-এর স্বপ্নভঙ্গ হয়। তিনি দাঁড়িয়ে আল্লাহু আকবার আওয়াজ তুলেন এবং বলেন, হে ফাতিমা, তুমি কি আমার কথায় কষ্ট পেয়েছিলে? জবাবে তিনি বলেন, কেনইবা আমার কষ্ট হবে না, যখন মুখের উপর আপনি আমাকে খোঁটা দি”িছলেন! অথচ আপনি আমার ও তার (সুলাইমান আ.-এর কন্যার) মর্যাদা সম্পর্কে পূর্ণ অবগত আছেন। তখন হযরত আলী (রা.) বললেন, হে আমার প্রিয়তমা ফাতিমা, আমি তো খোঁটাদানের উদ্দেশ্যে তোমাকে কিছুই বলি নি। কেবল ঘটনা বর্ণনা করেছি তোমার কাছে। মাটকথা নারীরা নেহায়েতই নরম তবিয়ত ও মনের দিক গলিত মোমের মতোন থাকে। তাদের তবিয়তে সন্দেহ সৃষ্টিগতভাবেই মিলিত থাকে। বিষয়টি সু¯’ মস্তিষ্কসম্পন্ন বক্তিমাত্রেই বুঝতে সম। সুতরাং স্ত্রীদের সামনে উপঢৌকন-উপহারের আলোচনা করা নিতান্তই অপছন্দনীয়। বোঝা উচিত, তার ভাগ্যে যতোটুকুন ছিলো, মিলেছে। মনে রাখা উচিৎ, বিবাব-উপঢৌকন তো সামান্য ব¯’ই মাত্র! ণকালই তার ¯’ায়িত্ব বাকি থাকে। যা দেখে লোকদের হা-হুতাশ থাকে। লোভে আল-জিহ্বা বেরিয়ে আসে। বেওকুফ লোকেরা একে অমূল্য সম্পদ, আলাদিনের চেরাগ ভেবে থাকে!হযরত সুফিয়ান সাওরী (রহ.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বিবাহে উপঢৌকনের আশা রাখে, সে চোর প্রকৃতির লোক।