া আহমদ আবদুল্লাহ
হজরত আবু হুরায়রা (রা.)- এর ভাষ্য। তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ! আমি প্রায় সময় ক্ষুধাতুর অব¯’ায় উপুড় হয়ে পড়ে থাকতাম। এতটা যন্ত্রণা ছিলো, পেটে পাথর বেধেও তা থেকে মুক্তি পেতাম না। সারাণ ছটফট করতাম। একদিন রাস্তার পাশে ক্ষুধার তাড়নায় কাতরা”িছলাম। হঠাৎ দেখি হজরত আবু বকর (রা.)সেখান দিয়ে যা”িছলেন। তৎণাৎ নিজেকে সংযত রেখে তাকে একটি আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। আমার ভেতর উদ্দেশ্যটা ছিলো, তিনি যেনো আমার জন্য কিছু খাবারের ব্যব¯’া করেন। কিš’ তিনি উত্তর দিয়ে আপন ঘরে চলে গেলেন। এ বিষয় তেমন ল্য করলেন না। এর কিছুণ পরে হজরত ওমর (রা.)কে দেখলাম। সঙ্গে সঙ্গে তাকেও জিজ্ঞেস করলাম। কিন্তু তিনিও কিছু না বলে চলে গেলেন। এরপর রাসুল (সা.) আমার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি আমাকে দেখে ম”দুহেসে বললেন, হে আবু হুরায়রা! আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল আমি উপ¯ি’ত। তিনি আমাকে সঙ্গে করে কোথায় যেনো নিয়ে চললেন। আমি চুপচাপ প্রিয়নবীজির অনুসরণ করলাম। তিনি এক বাড়িতে প্রবেশ করলেন। আমি ভেতরে প্রবেশের অনুমতি চাইলাম। রাসুল (সা.) অনুমতি দিলেন। দ্রুত বাড়িতে প্রবেশ করলাম। প্রিয় নবী (সা.) ভেতরে একটি পেয়ালায় কিছু দুধ দেখে জিজ্ঞেস করলেন, এ দুধ কোথা থেকে এলো? বাড়ির সবাই বললেন, কেউ একজন হাদিয়া স্বরূপ পাঠিয়েছে। রাসুল (সা.) ডাক দিলেন, হে আবু হুরায়রা! আমি বললাম, জি হুজুর! আমি উপ¯ি’ত। তিনি আহলে ছুফ্ফার সাহাবীদের ডেকে আনতে বললেন। আহলে ছুফ্ফারা হলেন ইসলামের মেহমান। তাদের পরিবার-পরিজন কেউ ছিলো না। ছিলো না ধনসম্পদ। ভরসা করার মত ছিলো না তাদের কেউ। কোনো সদকার মাল কিংবা সাহায্য আসলে প্রিয়নবী প্রথমে তাদের ডাকতেন। কোনো ধরণের হাদিয়া এলে তাদের কাছে পাঠাতেন এবং নিজেও গ্রহণ করতেন। আমি হুজুরের আদেশ শুনে হতাশ হয়ে পড়লাম। ভাবলাম, এ সামান্য দুধ দিয়ে কি হবে? আমিই তো ছিলাম এর পূর্ণ হকদার। দুধটুকু পান করে আমি কিছুটা শক্তি পেতাম। কিš’ যখন তারা এসে গেলো, তখন রাসুল (সা.) তাদের পান করাতে নির্দেশ দিলেন। তারা সবাই নিজ নিজ জায়গায় বসে পড়লেন। রাসুল (সা.) বললেন, দুধের পেয়ালা তাদের সবাইকে একেক করে দাও। আমি সবাইকে পান করা”িছলাম। তৃপ্তিসহ সবাই পান করছিলেন। এভাবে সর্বশেষ রাসুল (সা.)- এর কাছে পেয়ালাটি নিয়ে এলাম। প্রিয় নবীজি মুচকিহেসে বললেন, হে আবু হুরায়রা! এখন শুধু আমি আর তুমি বাকি। বললাম, ‘জি হুজুর। রাসুল (সা.) বললেন, বসে পড়ো এবং তৃপ্তিভরে পান করো। প্রিয় নবী (সা.) বারবার বললেন, আরো পান করো। অবশেষে আমি বাধ্য হলাম বলতে, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর কসম আমার পেটে বিন্দুমাত্র জায়গা নেই। এরপর হুজুর (সা.) আল্লাহর প্রশংসা এবং বিসমিল্লাহ বলে বাকিটুকু পান করে শেষ করলেন। (বোখারি: ৬৪৫২)
প্রিয় নবীজির প্রতিটি কাজ ছিলো প্রজ্ঞাপূর্ণ। সাহাবাদের দুঃখকষ্টে সহজের বুঝে নিতেন। ভালোবেসে কাছে টেনে নিতেন। এ জন্যই তিনি ছিলেন, রহমাতুল্লিল আলামিন।