তরিকুল ইসলাম সুমন : ইংরেজি মাধ্যম স্কুল পরিচালনায় ম্যানেজিং কমিটি গঠন,জাতীয় দিবস পালন,দেশীয় সংস্কৃতিসহ বাংলা ভাষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে উচ্চ আদালত যে রায় দিয়েছে,তা বাস্তবায়নে সরকারকে কঠোর হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদরা। তারা আরো বলেছেন,এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়বদ্ধতা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণকাজ করবে ব্যবস্থাপনা কমিটি।
অধ্যাপক ড.এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন,ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের (প্লে থেকে এ লেভেল) অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা আমাদের জাতীয় সঙ্গীত ও জাতীয় বিভিন্ন দিবস সম্পর্কে জানে না। তারা নিজেদের মতো করে কাজ করে। তাদের নিয়ন্ত্রণের জন্য নেই কোনো কমিটিও। অনেকেই রয়েছে তারা বাংলা বলতেই পারে না। খেয়াল খুশি মতো নিয়মনীতি চালু করে। এদের উপরে সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণও ছিলনা।এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লাগাম টেনে ধরাও প্রয়োজন ছিল। উচ্চাদালত কর্তৃক এ ধরনের রায় অনেক আগেই প্রয়োজন ছিল।
তিনি আরো বলেন, টাকা থাকলেই যে ইংরেজি মিডিয়ামে পড়াতে হবে এমনটা নয়। বাংলা মিডিয়ামে পড়েও অনেক ভালো ইংরেজি জানা যায়,উচ্চশিক্ষিত হওয়া যায়। এ ধারণাটা তাদের মধ্যে দিতে হবে। এটা ঠিক যে, কোনো ব্যবস্থাপনা কমিটি না থাকার করণে এসব প্রতিষ্ঠান স্বেচ্ছাচারী আচরণ করতো। নিজেদের খেয়াল খুশি মতো টাকা আদায় করতো। আদালতের এ নির্দেশনার পরে এসব প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে আসবে।
অধাপক হাসান আজিজুল হক বলেন, দেশে কোনো ইংরেজি স্কুলের প্রয়োজন নাই।বাংলা মাধ্যমই ইংরেজি শিক্ষার জন্য যথেষ্ট। এখন মানুষের মধ্যে একটা ধারণা তৈরি হয়েছে, ভালো ইংরেজি জানলে ভালো চাকরি পাওয়া যায়, এটা ঠিক না। একটা বিশেষ শ্রেণীর মানুষ বিশেষ শ্রেণী তৈরির জন্য এ কাজটি করছে। নিজেদের সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তি করছে। বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও এসব সন্তানরা আমাদের অনেক জাতীয় দিবস, জাতীয় সঙ্গীত জানে না। তারা আমাদের জাতীয় পতাকা, মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানেনা, কেউ কেউ আবার পালন না করার খবর রয়েছে।
উচ্চআদালতের এ রায়কে তিনি সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, এ রায় যত দ্রুত বাস্তবায়ন করা যায় ততই আমাদের সন্তানরা লাভবান হবে। আদালতের এ রায় যাতে কোনও ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অগ্রাহ্য করতে না পারে সেটি কঠোরভাবে মনিটরিং করতে হবে। সরকারকে কঠোর হস্তে এ কাজ করতে হবে।
উল্লেখ্য, ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পরিচালনায় ম্যানেজিং কমিটি গঠন, জাতীয় দিবস পালন, দেশীয় সংস্কৃতিসহ বাংলা ভাষার ওপর গুরুত্ব দেয়ার নির্দেশনা দিয়ে গতকাল রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। সম্পাদনা-হুমায়ুন কবির খোকন