ডেস্ক রিপোর্ট : হেফাজতে ইসলামের দাবিতে সরকার প্রধানও সায় দেওয়ার পর আইনজীবীদের মতামত নিয়েই সুপ্রিম কোর্টের মূল প্রাঙ্গণ ভাস্কর্য সরানোর সিদ্ধান্ত নেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ভাস্কর্যটি অপসারণের কাজ শুরুর আগে দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক ও বর্তমান সভাপতি ও সম্পাদকদের ডেকেছিলেন প্রধান বিচারপতি। বিডিনিউজ
মধ্যরাতে সুপ্রিম কোর্টের ঢোকার পথে লিলি ফোয়ারায় স্থাপিত হাতে তলোয়ার ও দাঁড়িপাল্লা ধরা নারীর ভাস্কর্যটি অপসারণের কাজ শুরু হয়। ভোরের আগে কাজটি শেষ হওয়া পর্যন্ত সেখানে তদারকিতে ছিলেন ভাস্কর্যটির শিল্পী মৃণাল হক।
প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠকে থাকা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেছেন, আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ভাস্কর্যটি সরানোর পক্ষে মত আসে। দুপুরে আদালতের মধ্যাহ্ন বিরতির সময় আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান বিচারপতি। বৈঠকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি জয়নাল আবেদীন ছাড়া সাবেক সভাপতিদের মধ্যে ছিলেন কামাল হোসেন, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও খন্দকার মাহবুব হোসেন, বর্তমান সম্পাদক মাহবুবউদ্দিন খোকন, সাবেক সম্পাদক এম আমিন উদ্দিন, মাহবুব আলী ও শ ম রেজাউল করিম।
বৈঠকে উপস্থিত সাবেক এক সাধারণ সম্পাদক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে চিফ জাস্টিস আমাদের ডেকেছিলেন। ভাস্কর্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই যে একটা ভাস্কর্য… এটা নিয়ে কথা উঠেছে; কী করা যায়?’ প্রধান বিচারপতির এই কথার পর কেউ কোনো কথা বলছিল না। প্রথম নীরবতা ভাঙেন আমিনউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘স্যার এটা নিয়ে কথা উঠেছে, যদি হাই কোর্টের সামনে গ-গোল হয়, তাহলে কোর্টের ইমেজ নষ্ট হবে, এটা সরিয়ে দেন’।
আমিনউদ্দিনের বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে মাহবুব আলীও ‘আপাতত ঝামেলা’ এড়ানোর পরামর্শ দেন বলে সাবেক ওই সাধারণ সম্পাদক জানান। আমিনউদ্দিন বলেন, যেহেতু এটা নিয়ে (ভাস্কর্য) মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তাই আমরা একটা অনুরোধ উনাদের (প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন) করেছিলাম, ভাস্কর্যটা অপসারণ নয়, স্থানান্তর করার জন্য। এটা কিন্তু অপসারণ করা হয়নি, স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে। ভাস্কর্যটা কোথায় স্থানান্তর হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা এখন উনারা ঠিক করবেন। তবে রাতেই ভাস্কর্যটি সরানো হবে, এমনটি জানতেন না বলে জানান আমিনউদ্দিন। তিনি বলেন, আমরা জানতাম যে এটা রাতেই করা হবে। দিনে কোর্ট খোলা থাকলে গাড়ি-টাড়ি থাকে, ঝামেলা। এ জন্যেই হয়তো রাতেই সরানো হয়েছে। সম্পাদনা : হুমায়ুন কবির খোকন