মতিউর রহমান, সাভার : রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারের নামা গেন্ডা এলাকায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শেষ হয়েছে। অভিযান চালিয়ে কোনো জঙ্গির সন্ধান পাওয়া যায়নি। সেখান থেকে জঙ্গিদের রেখে যাওয়া ৭টি হ্যান্ড গ্রেনেড ও ৩টি সুইসাইডাল ভেস্ট উদ্ধার শেষে নিষ্ক্রিয় করেছে পুলিশ। এমনকি ওই বাড়িতে অবস্থান নেওয়া জঙ্গিদের সঠিক নামও নিশ্চিত করে বলতে পারেনি পুলিশ। তবে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার শাহ শাফিউর রহমান মিজান তদন্ত সাপেক্ষে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করার কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, জঙ্গিরা বিভিন্ন সময় একাধিক ছদ্মনাম ব্যবহার করে বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। এ কারণে তারা সঠিকভাবে জঙ্গিদের নাম প্রকাশ করতে পারেনি। তবে ওই বাড়িতে জঙ্গিদের পরিচয়ের কিছু নথি পেলেও সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়াও বিষয়টি তদন্ত করে বের করতে হবে জানিয়েছেন তিনি।
এ সময় পুলিশ সুপার বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্র্যান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট সাভার থানা পুলিশের একটি দল নামা গেন্ডা এলাকার আনোয়ার মোল্লার বাড়ির ২য় তলায় অভিযান শুরু করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির ভেতরে থাকা জঙ্গি সদস্য পালিয়ে যায়। এ সময় ওই বাড়ি থেকে এক নারী ও দুই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাদেরকে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আয়নাল হক গেদুর জিম্মায় দেওয়া হয়। এ সময় স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের ওই দলটি পাশের সৌদি প্রবাসী হাবিবের বাড়িতে অভিযান শুরু করে।
রাত সাড়ে আটটার দিকে বাড়িতে প্রবেশের পর ভেতরে কাউকে পাওয়া যায়নি। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখান থাকা জঙ্গিরাও পালিয়ে যায়। পরে কক্ষের তালা ভেঙে ব্যাটারি, সার্কিট ও স্পিন্টার হিসেবে ব্যবহারের জন্য বেয়ারিংয়ের বল পাওয়া গেলে ভেতরে বড় ধরনের বোমা থাকতে পারে বলে ধারণা করে পুলিশ। পরে সিটিটিসির প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করে রাতে বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়। গতকাল শনিবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকা থেকে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই বাড়িতে অভিযান শুরু করে। পরে দুপুরের পর থেকে তারা একটি ব্যাগ থেকে উদ্ধার করা বোমাগুলো একে একে নিষ্ক্রিয় করার কাজ শুরু করে। এ সময় ৭টি গ্রেনেড ও তিনটি সুইসাইড ভেস্ট নিষ্ক্রিয় করা হয়। পরে দুপুর তিনটার দিকে জঙ্গি আসন্তার অভিযানের সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
অভিযান সমাপ্তের পর ওই বাড়ির পাশে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার শাহ শাফিউর রহমান মিজান এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, জঙ্গিরা নাশকতার জন্যই ওই বাড়িতে অবস্থান করছিল। এছাড়াও ওই বাড়ি থেকে ব্যাটারি, পাউডার, অনেকগুলো মোবাইল, ল্যাপটপ ও বেয়ারিংয়ের বলসহ বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান