রিকু আমির : ১৪০জন চিকিৎসকের চাকরি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) বহাল থাকবে- সর্বোচ্চ আদালত এমন রায় দেবার পরও ভয় কাটছে না সেসব চিকিৎসকের।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলীয় ঐক্য জোটের আমলে নিয়োগ পাওয়া এসব চিকিৎসকদের অভিযোগ- তারা রিভিউতে জেতার পরও বিশ্ববিদ্যালয় সেটাকে আমলে নিচ্ছে না। লিখিত রায় না পেলে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে না- এমন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করছে বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে সর্বোচ্চ আদালতের মৌখিক নির্দেশনাই যথেষ্ট।
নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে এসব চিকিৎসকদের করা আপিলের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ গত ২১ মে চাকুরিতে বহাল রাখার এই আদেশ দেয়। হাই কোর্টের রায়ের পর ২০১৬ সালের মার্চ থেকে এই চিকিৎসকরা বেতন পাচ্ছেন না। ওই বছরের এপ্রিল থেকে তাদের হাজিরা খাতাতেও সই করতে দেওয়া হচ্ছিল না। আপিল বিভাগ রায়ে বলেছে, চাকরিতে ফিরতে পারলেও ২০১৬ সালের মার্চ থেকে নতুন করে যোগদান পর্যন্ত সময়ের বেতন তারা পাবেন না। মাঝখানের এই সময়টুকু তাদের অবৈতনিক ছুটি হিসেবে গণ্য হবে। চিকিৎসকদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান রোববার বিকালে এ প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের আইনজীবীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এটা সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ। এটা অমান্য করার সুযোগ নেই। রায়ের লিখিত কপির জন্য অপেক্ষা করছি। তারপরই নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত ২৭ মে বিএসএমএমইউ’র সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য ও ওইসব চিকিৎসকদের কাছ থেকে জানা গেছে- সভায় সিন্ডিকেট ও সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী বলেছেন, এই চিকিৎসকদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তাদের নাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠাতে। প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন- মামলা করেছেন তারা (স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান), অথচ তাদের সরকার ক্ষমতায় থাকা সত্বেও তাদের চোখের সামনে দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের আমলে নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসদের চাকরিতে যোগদান কীভাবে মানায়?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৪০ চিকিৎসকের একজন এ প্রতিবেদককে বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের রায় আমাদের পক্ষে, সেখানে এ ধরণের কথাবার্তা আসবে কেন? সংসদীয় স্থায়ী কমিটি কী সুপ্রিম কোর্টেরও উপরে?
রুস্তম আলী ফরাজী ও শারফুদ্দিন আহমেদের কথার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, এমন কোনো কথা সিন্ডিকেট সভায় হয়নি। আমরা আলোচনা করেছি যে, কীভাবে এটা দ্রুত সমাধান করা যায়। রায়ের লিখিত কপি পাবার পরই বাকি কাজ করা হবে। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি