কামরুল আহসান : ৯ দিনের সফর সেরে ট্রাম্প বাড়ি ফিরলেন। কিন্তু, মাথায় করে নিয়ে গেলেন মেয়ের জামাইয়ের দুঃশ্চিন্তা। জ্যারেড কুশনার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ের জামাই এবং প্রধান উপদেষ্টা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তিনি রাশিয়ার সঙ্গে গোপন যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন বা করেছেন। অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এবং নিউইয়র্ক টাইমস। পত্রিকা দুটো করছে, গত ডিসেম্বরে কুশনার মার্কিন গোয়েন্দারের নজর এড়িয়ে রাশিয়ার সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন। তখন তিনি রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়াকের সঙ্গে এক গোপন বৈঠক করেন নিউইয়র্কের ট্রাম্প টাওয়ারে। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ট্রাম্পের প্রথম নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনও।
বলাই বাহুল্য কুশনার এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, এটি নিছকই একটি সৌজন্য সাক্ষাত ছিল। সেখানে এরকম কোনো বিষয় উঠেনি। কুশনার নাকি তার বন্ধুদের বিরক্ত হয়ে এও বলেছেন, তিনি ও তার স্ত্রী বোধহয় ট্রাম্পের পাশ থেকে সরে যাবেন। কারণ শুরু থেকেই তাদের নানাভাবে নাজেহাল করা হচ্ছে। যা তাদের সম্মানহানী করছে। এসবে তারা ক্লান্তি বোধ করছেন। ক্লান্ত বোধহয় কিছুটা ট্রাম্প হয়ে গেছেন। তার তর্জনগর্জন অনেক কমে গেছে। প্রথম এই বিদেশ সফরে তাকে বেশ শান্তশিষ্ট ভদ্রলোক মনে হয়েছে। সৌদি আরবের সাথে বিশাল কিছু ব্যবাসিয়ক চুক্তি করেছেন। ইসরাইল ও ফিলিস্তিন সমস্যার কোনো আশু সমাধানের ইঙ্গিত না দিয়ে গেলেও সমস্যা না বাড়ার বন্দোবস্ত করে গেছেন তিনি। ইসরায়েলের কোন প্রতিনীধি ছাড়াই গিয়েছিলেন ওয়েস্টার্ন ওয়াল পরিদর্শনে। যা একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত হিসেবেই দেখছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ সাথে করে ইসরাইলি প্রশাসনের কাউকে নিয়ে গেলে তা চোখে পড়ে যাওয়ার মতো হতো। তাতে হয়তো মনে করা হতো ট্রাম্প ইসরাইলকেই সাপোর্ট দিচ্ছেন। ইউরোপে এসে সারলেন দুটো গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন। ব্রাসেলসে ন্যাটো সম্মেলনে পর্যাপ্ত সংযমের পরিচয় দিয়েছেন। আগে যেরকম বলেছিলেন, ন্যাটো ত্যাগ করবেন, সেরকম কোনো ইঙ্গিত দেননি। জি-৭ সম্মেলনেও তাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল বিশ্বনেতারা। বিশেষ করে জলবায়ু চুক্তি নিয়ে, ২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। জানিয়েছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু, বৈদেশিক সফরের শেষ মুহূর্তগুলোতে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে কুশনার প্রসঙ্গ। মেয়ের জামাই জ্যারেড কুশনারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার সঙ্গে গোপন যোগাযোগের। সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের মধ্যবর্তী সময়ে সিরিয়া ও অন্যান্য নীতিগত বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্যই এই যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন কুশনার। এই ইস্যুটি তাকে আবার নতুন করে ভোগাবে বোঝা যায়। নিউ ইয়র্ক টাইমস