এস এম নূর মোহাম্মদ : অ্যাডভোকেট এম আই ফারুকী বলেছেন, পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট সামরিক শাসনামলে জারি করা সকল ফরমান বাতিল করলেও সুপ্রিম জুডিশিয়াল ব্যবস্থাকে রেখে দিয়েছেন। এরপর সরকার পঞ্চদশ সংশোধনীতেও এ ব্যবস্থা রেখে দিয়েছে। এ অবস্থায় বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী করেছে সরকার। কিন্তু এই ষোড়শ সংশোধনী স্বাধীন বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্রের মৌলিক কাঠামোর লংঘন। তিনি বলেন, বিচারকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তা তদন্ত হতে হবে বিচারকদের দিয়েই, রাজনীতিবীদদের দিয়ে নয়। ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল শুনানিতে গতকাল রোববার অ্যামিকাস কিউরির বক্তব্য পস্থাপনকালে এসব কথা বলেন ফারুকী। গতকাল প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে অষ্টম দিনের মতো এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
সুপ্রিম কোর্টের ১২জন জেষ্ঠ্য আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল আপিল বিভাগ। এরমধ্যে টিএইচ খান, আমীর-উল ইসলাম ও রুকন উদ্দিন মাহমুদের বক্তব্য উপস্থাপন শেষ হয়েছে। গতকাল এম আইফারুকী আংশিক বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তার আগে বক্তব্য শেষ করেন আমীর-উল ইসলাম। শুনানি শেষে ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সংসদের মাধ্যমে বিচারকর অপসারণ পদ্ধতি বিশ্বের যেসব দেশের রয়েছে সেখানে নানা ধরনের বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। এটি সফল হয়নি। আমাদের আশে পাশের যেসব দেশ রয়েছে বিশেষ করে ভারত শ্রীলংকা মালয়েশিয়াতে এটি সফল হয়নি। এসব দেশের দৃষ্টান্ত আমি আদালতে তুলে ধরেছি।
তিনি বলেন, নির্বাচনী বিরোধ নিয়ে যেসব মামলা হয়, সে গুলোর শুনানি ও নিষ্পত্তি হয় হাইকোর্টে। এসব মামলার নিষ্পত্তি করেন বিচারকরা। এখন বিচারকদের অপসারণের বিষয়টি যদি সংসদের হাতে থাকে তাহলে ভারসাম্য নষ্ট করবে এবং বৈপরিত্য সৃষ্টি করবে। আমরা ঘরে ফিরে যেতে চাই, অ্যাটর্নি জেনারেলের এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গে আমির-উল ইসলাম বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ পঞ্চম সংশোধনী মামলার রায় দিয়ে ঘরে ফিরিয়েছেন। ঘরে ফেরাতে গিয়ে তারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সাহস করে করেছিলো। স্বাধীনতা যাতে অক্ষুণœ থাকে সে জন্য এটি সংসদের হাতে না রেখে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতেই রাখা হয়। ওই রায়েই বলা হয়েছে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল অনেক বেশি স্বচ্ছ ও কার্যকর। ঘরে ফেরার ব্যাপারে আপিল বিভাগ তার রায় দিয়ে সাহায্য করেছেন।
আমীর-উল ইসলাম আরও বলেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ভারসাম্যপূর্ণ একটি পদ্ধতি। এটা যেভাবে চলে আসছে এবং তার যে অর্জন ও সফলতা সেটা দেশবাসী গৌরবের চোখে দেখে। এই গৌরবকেই আমাদের সমুন্নত রাখতে হবে। সম্পাদনা-হুমায়ুন কবির খোকন