ফেনী নদীতে অবৈধ চিংড়ির রেনু আহরণ, ধ্বংস হচ্ছে শতাধিক প্রজাতির মাছের পোনা
শাহজালাল ভূঞা, ফেনী: দেশের উপকুলীয় এলাকায় বাগদা ও গলদা চিংড়ি পোনাসহ অন্যান্য মাছের পোনা আহরণ নিষিদ্ধ থাকলেও ফেনী নদী উপকূলীয় এলাকায় চলছে চিংড়ি পোনা আহরণের মহোৎসব। এক শ্রেণীর মুনাফালোভী ব্যবসায়ী শত শত জেলের মাধ্যমে অবাধে আহরণ করছে গলদা-বাগদা চিংড়ির রেনু। চিংড়ি পোনা আহরণ করতে গিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে শতাধিক প্রজাতির মাছের পোনা। আইন বা নীতিমালা মানছেনা কেউ । এব্যাপরে স্থানীয় প্রশাসন কোনো রকম ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের ছত্রছায়ায় অবাধে চলছে এ রেনু সংগ্রহ।সরেজমিনে দেখা যায়, ফেনী নদীর মুহুরী সেচ প্রকল্প এলাকা থেকে শুরু করে চট্টগ্রামের মীরসরাই এর ইছাখালী, বানচন্দ খাল পর্যন্ত এবং ছোট ফেনী নদীর কাজীর হাট সøুইজ গেইট থেকে দক্ষিণে সন্দ্বিপ চ্যানেল পর্যন্ত বিশাল উপকুলীয় এলাকায় প্রতিদিনই লাখ লাখ চিংড়ি পোনা আহরণ করা হচ্ছে। পোনা আহরণকারীর লোকজন নদী ও খালের মুখে মশারির জাল ব্যবহার করে গলদা ও বাগদা চিংড়ি পোনা আহরণ করে। চিংড়ির রেনু সংগ্রহ করার সময় কোরাল, কাকড়া, বাইলা, মলা, ডেলা ইলিশসহ আরো অনেক প্রজাতির পোনা জালে আসে। অতপর পোনাগুলোকে কাছাকাছি প্লাস্টিকের বড় পাত্র বা ড্রামে রাখা হয়। পাত্র ভর্তি হলে নদীর পাড়ে তোলা হয়। এই জন্য নদীর পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধভাবে শত শত ঘর। এইসব ঘরে এবং ঘরের বাইরে বসে দিনরাত জেলেরা শুধু চিংড়ি পোনা সংরক্ষণ করে বাকি পোনাগুলো মাটিতে ফেলে দেয়। ফলে অন্য প্রজাতির মাছের পোনা মরে যায়।
একাধিক জেলে জানায়, পোনা আহরণ করে জেলেরা স্থানীয় মহাজন বা আড়ৎদারের কাছে বিক্রি করা হয়। পরে তারা অন্যান্যদের মাধ্যমে প্রতিটি পোনা ১-২ টাকায় কিনে তা ৩-৪ টাকায় ঘের মালিকদের কাছে বিক্রি করে। এইসব পোনা ঢাকা, খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষিরা জেলার চিংড়ি ঘেরগুলোতে পাঠানো হয়। শুধু সোনাগাজী এলাকা থেকেই দৈনিক লক্ষাধিক চিংড়ি পোনা বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।
স্থানীয় রেণু পোনা ব্যবসায়ী আবদুল আলী মুন্সী জানান, উপকুলীয় অঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ নদীতে চিংড়ি পোনা আহরণ করেই জীবিকা নির্বাহ করছে। ফেনী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. মনিরুজ্জামান বলেন, অবৈধভাবে রেনু আহরণে বেশি ক্ষতি হচ্ছে ইলিশের। এছাড়া শতাধিকের ওপর জলজপ্রাণী ধ্বংস হচ্ছে। নদীতে চিংড়ির রেনু পোনা ধ্বংস করা অবৈধ। যদি কেউ এভাবে তা আহরণ করে থাকে, তাহলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান