ভেজাল পণ্য বিক্রি : আইন কী বলে?
অ্যাডভোকেট জাহিদ আহমেদ হিরো
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের দেশে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী আছেন যারা অধিক মুনাফার আশায় বা বাজার ধরার জন্য রমজান এলেই ভেজাল পণ্য বিক্রি করেন। শুধু তাই নয়, ওজনে কারচুপি বা কম দেওয়া, বাটখারা বা ওজন পরিমাপক যন্ত্রেও কারচুপি করতেও এতটুকু দ্বিধা করেন না। তারা এতটাই অনৈতিক যে, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য এবং ঔষধও বিক্রয় করেন। কিন্তু এ সমস্ত সকল কাজই আইনের চোখে ঘৃণ্য অপরাধ। দেশে প্রচলিত আইন হিসেবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এখানে প্রাসঙ্গিক। উক্ত আইনটি আইন প্রণেতারা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ এবং ভোক্তা অধিকার বিরোধী কার্যকলাপ প্রতিরোধ করার জন্য প্রণয়ন করেছেন। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন এর ৪১ ধারায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি জ্ঞাতসারে ভেজাল মিশ্রিত পণ্য বিক্রি করিলে বা করিতে প্রস্তাব করিলে তিনি একটি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হইবে। যাহার শাস্তি তিন বৎসর পর্যন্ত কারাদ- ও দুই লাখ টাকা অর্থদ- বা উভয় দ-ে দ-িত হইবেন।
উক্ত আইনে আরও বলা হয়েছে, কোনো ব্যবসায়ী কোনো পণ্য বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অসত্য ও মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করিলে তিনি এক বছর কারাদ- ও অনধিক দুইলাখ টাকা অর্থদ-ে দ-িত হইবেন। এছাড়া ওজনে কারচুপির শাস্তি এক বছর কারাদ- ও পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা এবং বাটখারা বা ওজন পরিমাপের যন্ত্রে কারচুপির শাস্তিও একই করা হয়েছে। এছাড়াও মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য ও ওষুধ বিক্রির শাস্তিও এক বছর কারাদ- ও পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদ-। শুধুমাত্র আইন থাকাই যর্থেষ্ট নয়। আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তাছাড়া নৈতিকতার জায়গা থেকেও এই অপরাধগুলো সম্পূর্ণ অনৈতিক। যেখানে আইন থাকা সত্ত্বেও এই অপরাধগুলো প্রতিরোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, সেখানে আইন না থাকলে এর কি পরিণতি হতো?
লেখক: আইনজীবী ও কলামিস্ট
সম্পাদনা: আশিক রহমান