রহমান শেলী
আমাদের নৈতিকতার অবক্ষয় নয় কি? সেন্ট্রাল হাসপতাল, ঢাকা। তার একটি উদাহরণ। যার বেদনা, সেই বুঝে। বেদনা দূর করতে আইন নিজের হাতে নেওয়া একাবারে ঠিক নয়। কোনো ঘটনা ঘটলে আমরা শুনেই পাগল হয়ে যাই, গিয়ে ব্যক্তিকে তো মারধর করি, আবার প্রতিষ্ঠানকেও ভাঙচুর করি। ঘটনা ঘটবে, তা আইনের আওতায় এনে বিচার চাইব, তা না করে ক্ষতিতে সাধন করা হয়। ভুল চিকিৎসা হতে পারে, তার শাস্তিরও ব্যবস্থা আছে। তা না করে যে বিরাট ভুলটি করা হয়: ১. নিজে আইন হাতে নেওয়া। তাতে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা কম দেখানো। আমরা জানি, আইনকে শ্রদ্ধা করা মানে দেশকে শ্রদ্ধা করা, দেশকে শ্রদ্ধা মানে, দেশপ্রেম করা। ২. নিজের হাতে আইন নিয়ে প্রকৃত বিচার না পাওয়া। রোগী তার ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত থাকল। ৩. এসব ক্ষেত্রে বেশিরভাগই ‘চিলে কান নিয়েছে’ অবস্থা। ঘটনা যাচাই না করে অ্যাকশন চাওয়া। ৪. ছাত্ররা ভবিষ্যতের রূপকার। তার ভিতটা হয় বিদ্যাপ্রতিষ্ঠান থেকে। এসব করে তার বিচ্যুতি হলো। ৫. রোগীর ভাল চিকিৎসা না হওয়ার জন্য হাসপাতাল ও ডাক্তারদের মারধর করা হলো। তাতে, হাসপাতালের ক্ষতি হলো। আবার হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের জন্য কিছুটা হলেও ক্ষতি হলো।
হাসপাতালে আঘাতের কারণে ডাক্তাররা ভীতু বনে যান। চিকিৎসা কিছুটা বিঘœ হয়। আরও অনেক কিছু বলা যায়। বলতে চাই না। এসব ক্ষেত্রে কয়েকটি কাজ করা যায়। তা হলোÑ ১. কর্তৃপক্ষকে জানানো। তাদের সঙ্গে বসে ভুল চিকিৎসার কথা বলা যায়। রোগীকে অবহেলার কথা বলা যায়। দোষ প্রমাণ হলে ক্ষতিপূরণ আদায় করা বা অন্য ব্যবস্থায় যাওয়া যায়। ২. আইনের আশ্রয় নেওয়া। পুলিশের সাহায্য নেওয়া। ৩. মানববন্ধন করা যেতে পারে। ৪. সাংবাদিক সংম্মেলন ডেকে বলা যেতে পারে। কিন্তু তা না করে জান ও সম্পদ নষ্ট করি। নিজেকে উগ্র জাতি হিসেবে প্রকাশ করি। প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, একজন মানুষও বিনা চিকিৎসায় না মরুক, তাই কাম্য। ধৈর্যই মানুষের মহৎ গুণ এবং একটি জাতির বড় পরিচয়। ভাল থাকুন। ভাল স্বপ্ন দেখুন। দেশকে ভালবাসুন।
লেখক: অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ, ঢাকা ও সাবেক ছাত্র, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সম্পাদনা: আশিক রহমান