এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবিলায়ও সফল
ড. বদরুল হাসান কচি
২৯ এপ্রিল, ১৯৯১ সাল। ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত। মাত্র কয়েক মিনিটের তা-ব। প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে মুহূর্তেই ল-ভ- হয়ে যায় চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চল। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালী, চন্দনাইশ ও আনোয়ারার অর্ধলাখ মানুষ নিহত হয়। ওই অঞ্চলের ৭৫ শতাংশ ঘরবাড়িই ধ্বংস হয় সেবার। দুই যুগ পর ২৯ মে ২০১৭। সংকেত ছিল ১০ নম্বর মহাবিপদের। ১৩৫ কিলোমিটার গতিতে ঘূর্ণিঝড় হলো। জলোচ্ছ্বাসও হলো। ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় ২০ হাজারের মতো। তবে প্রাণহানি হলো আটজনের। তাও তিন জেলা মিলে।
সময় বদলে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এগিয়ে যাচ্ছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায়ও। যেকোনো সময়ের চেয়ে বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবিলায় এখন অধিক কার্যকর এবং সতর্ক অবস্থানে রয়েছে, নজির মেলে মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মোকাবিলায়। আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় আবহাওয়ার তথ্য সংগ্রহ এবং তা মুহূর্তেই পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে দুর্যোগপ্রবণ এলাকার মানুষের মাঝে। মানুষও এখন অধিক সচেতন। প্রাণ বাঁচাতে চোখ-কান খোলা রেখেই গুরুত্ব দেন আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট নানা তথ্য-উপাত্তকে।
এটি ছিল সবার অংশগ্রহণে দুর্যোগ মোকাবিলার নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। বাংলাদেশ আর আগের জায়গায় নেই। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আগাম প্রস্তুতিতে বিশেষ সফলতার কারণেই দুর্যোগ ওভারকাম করা সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি আমরা দেখলাম, হাওর এলাকার অকস্মাৎ বন্যায় লাখ লাখ কৃষক পরিবার সকল ফসল হারিয়ে যখন ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর শংকায় ছিলেন তখন সরকার কৃষকদের পরবর্তী ফসল ঘরে না ওঠা পর্যন্ত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিতের উদ্যোগ নিয়েছেন এবং শস্য ও কৃষি উপকরণ বিতরণের কাজও চলছে। এত বড় দুর্যোগ বাংলাদেশ একাই সামাল দিয়েছে, কোনো বিদেশি সহায়তা নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি। স্বনির্ভর বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে দুর্যোগ পরবর্তী এই কর্মসূচি।
লেখক: আইনজীবী ও কলামিস্ট
সম্পাদনা: আশিক রহমান