জান্নাতুল ফেরদৌস পান্না : ‘ছালাম ছালাম হাজার ছালাম সকল শহীদ স্মরণে’ অথবা ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি’ এমন সব অসংখ্য কালজয়ী গানের কণ্ঠশিল্পী স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রথম সঙ্গীত শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার। বর্তমানে তিনি কিডনি ও হার্টে সমস্যাজনিত জটিল রোগে মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নেফ্রোলজি বিভাগের ৩০৮ নম্বর কেবিনে।
বিশিষ্ট এই সঙ্গীতজ্ঞ অত্যন্ত কষ্টের সঙ্গে আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, এ দেশের মানুষ আমাকে ভালবাসে। গান গেয়ে আমি মানুষের মন জয় করেছি। আমি আরো কিছুদিন বেঁচে থাকতে চাই। বেঁচে থেকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আরো ২০টি গান মানুষকে উপহার দিয়ে যেতে চাই। মানুষ চিরদিন বাঁচে না। আমিও বাঁচবো না। আর আমি যদি না বাঁচি তবে আপনারা আমাকে টুঙ্গিপাড়ায় রেখে আসবেন। এই কথা বলতে বলতে দেশের এই স্বর্ণকণ্ঠ ‘মুজিব বাইয়া যাওরে… গানটি গেয়ে বলেন, আমাকে তার (বঙ্গবন্ধুর) পাশে থাকতে দিবেন। তার পাশে থাকতে পারলেই আমি ধন্য।
আব্দুল জব্বার বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আমার চিকিৎসা ভালো হচ্ছে। সুচিকিৎসার কোনো অভাব নেই। তিনি বলেন, বাংলার মানুষ আমাকে ভালবাসে। আমি তাদের গান দিয়ে জয় করে নিয়েছি। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমি যদি তোমাকে ভালবেসে নাই বা পেলাম তবে সেই ভালবাসার আমার দরকার নেই। আমার জীবনের আরো অনেক কিছু করার বাকি আছে। আমি বেঁচে থেকে সেগুলো করতে চাই। জীবনে বঙ্গবন্ধুর উপর বেশি গান গেয়েছি। শেষ জীবনে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ২০টি গান সিডি আকারে মানুষকে দিয়ে যেতে চাই। এই গানগুলো বের করা বাংলাদেশের আর কারো পক্ষে সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আমার যে রোগ হয়েছে জানি না এই গানগুলো করে যেতে পারব কিনা। আমি চাইলে দেশে ষোল কোটি মানুষ আমার জন্যে ১ টাকা করে দিলেও ষোল কোটি টাকা হবে, কিন্তু আমি সরকারকে শরমে ফেলতে চাই না। আমি মনে করি সরকার আমার পাশে শেষ পর্যন্ত থাকবে। আমি আমার শেষ ইচ্ছাটা পূরণ করে যেতে পারব। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গানগুলো দেশের মানুষকে দিয়ে যেতে পারব।
তিনি আরো বলেন, বেঁচে থাকলে চেষ্টা করবো মানুষের জন্যে আরো কিছু গান উপহার দিয়ে যেতে। তিনি মুক্তিযোদ্ধা ভাই বোন ও দেশের সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ