‘ভ্যাটের কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়বে’
তানভীর আহমেদ : ভ্যাট, করারোপ ও সিডি ভ্যাটের কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে যে কর কাঠামো আছে তাতে মূল্যস্ফীতি বাড়বে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। নিম্ন ও মধ্যবিত্তসহ সাধারণ মানুষ বেশি চাপে পড়বে বলে মনে করছে সিপিডি। গতকাল রাজধানীর এক হোটেলে প্রস্তাবিত বাজেটের উপর আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সিপিডির বক্তারা এ সকল কথা বলেন।
সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে আসলে সংশয় রয়েছে। বাজেটে যে কর ও ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে তাতে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে, বাড়বে ভোগ ব্যয়। ফলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। এতে নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ সবচেয়ে বেশি চাপে পড়বে।
তিনি বলেন, অত্যন্ত দুর্বল কাঠামোর উপর ভিত্তি করে এবারের বাজেট তৈরি করা হয়েছে। এ বাজেট কর্মসংস্থান এবং বিনিয়োগবান্ধব নয়। এতে রাজস্ব আয়ের পরিসংখ্যানগত অসঙ্গতি রয়েছে। এক বছরে রাজস্ব আদায় ৪০ শতাংশ বাড়ার কোনো সুযোগ নেই। বিদেশি সাহায্য ও রাষ্ট্রীয় খরচ দ্বিগুণের বেশি করাও অসম্ভব। পুরো বাজেটে যে আয় ব্যয় রয়েছে তা বাস্তবায়নে আসলে কোনো সুর্নিদিষ্ট পরিকল্পনা নেই। ভ্যাট আইনে নতুন আইনের মিশ্রণ ঘোষণা করা হয়েছে কিন্তু এ বিষয়গুলো পরিষ্কার নয়। আমরা ধারণা করছি যে এর অভ্যন্তরীণ বাজারে এর ফলে চাপ বেশি পড়বে। ভ্যাট আইনের কারণে উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। আগামী অর্থবছরে যে বৈদেশিক সহায়তা লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, তা অবাস্তব। গত চার বছর মিলে এ পরিমাণ বৈদেশিক সাহায্য নেওয়া যায়নি। অর্থমন্ত্রী আসলে কোনো রকমে একটা অংক দিয়ে হিসাব মিলিয়ে দিয়েছেন। এগুলো বাস্তবসম্মত নয়। আগামী অর্থবছর ৭ দশমিক ৪ শতাংশ যে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে তা অবাস্তব। প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য অতিরিক্ত এক লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ দরকার হবে। যার মধ্যে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ ৬৬ হাজার কোটি টাকা এবং সরকারি খাতে ৫০ হাজার কোটি টাকার। কিন্তু বর্তমানে যে পরিস্থিতি তাতে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ বাড়বে না।
তিনি আরও বলেন, রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৩১ দশমিক ৮ শতাংশ। যেখানে গড়ে ১৫ দশমিক ৩ শতাংশের বেশি হয়নি। ঘাটতি হিসাব মেলাতে সরকার ঘাটতির অংক পুরোটাই বৈদেশিক সাহায্যের উপর ফেলা হচ্ছে।
বৈদেশিক সহায়তা যে পরিমাণ ধরা হচ্ছে তা বাংলাদেশের ইতিহাসে এত পরিমাণ ব্যবহার হয়নি। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ১২ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা ঘাটতি রয়েছে। সম্পাদনা : ইয়াছির আরাফাত