প্রস্তাবিত বাজেট নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষকে চাপে ফেলবে : সিপিডি
জাফর আহমদ : প্রস্তাবিত বাজেটে যে কর ও ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে, তাতে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে, বাড়বে ভোগ ব্যয়। আর বেড়ে যাবে মূল্যস্ফীতি। ফলে নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ চাপে পড়বে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর লেকশোর হোটেলে প্রস্তাবিত বাজেট পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, গবেষণা ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খানসহ সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সামগ্রিকভাবে বাজেটে যে আয় ও ব্যয় ধরা হয়েছে, তা বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। শুধু প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা দিয়ে দক্ষতার সঙ্গে বাজেট বাস্তবায়ন করা যাবে না। বাজেট সফলভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য একটা রাজনৈতিক অর্থনীতি আছে। সেটা হলো রাজনৈতিক দূরদর্শী, সামাজিক নেতৃত্ব ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনা। এজন্য জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
দেশে বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ব্যবস্থাকেই গুরুত্ব দেওয়া হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুধু প্রশাসনিক ব্যবস্থায় বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এবারের বাজেটে যে আটটি ধারণা বা অনুমানের ওপর প্রণয়ন করা হয়েছে, তার মধ্যে অধিকাংশের বড় ধরনের সংশয় রয়েছে। জিডিপির প্রবৃদ্ধি বা মূল্যস্ফীতির হারের ব্যাপারে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তাকে আমরা আংশিকভাবে সঠিক বলে ধরে নিচ্ছি।
বাজেটে যে প্রত্যাশা বা আকাাক্সক্ষা উঠে এসেছে তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, এ আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নে প্রয়োজন কর্মপরিকল্পনা। প্রস্তাবিত বাজেটে আগের ভ্যাট আইন ও নতুন আইনের মিশ্রণ করা হয়েছে। তবে আগের আইনের কোন অংশ এবং কি সংযোগ হলো তা স্পষ্ট করেননি অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আগামী অর্থবছরে ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক সহায়তা ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রার যে হিসাব ধরা হয়েছে, তা অবাস্তব। বাংলাদেশের ইতিহাসে গত চার বছর মিলেও এই পরিমাণ বৈদেশিক সাহায্য নেওয়া যায়নি। অর্থমন্ত্রী আসলে কোনোরকমে একটা অংক দিয়ে হিসাব মিলিয়ে দিয়েছেন। এগুলো বাস্তবসম্মত নয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক অর্থ ব্যবহার হয়েছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ।
দেবপ্রিয় বলেন, সরকারের বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তার বাস্তবায়ন হতাশাজনক। অতীতে মেগা প্রকল্পে যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে একমাত্র পদ্মা সেতু ছাড়া অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্পের ব্যয় ঠিকমতো হচ্ছে না। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এসব প্রকল্প দেখভাল করা হচ্ছে কিন্তু তারপরও সেগুলোর অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। এ কারণে ব্যক্তিখাতও চাঙ্গা হচ্ছে না বলে তিনি উল্লেখ করেন। সম্পাদনা : ইয়াছির আরাফাত