চলতি অর্থবছরে বরাদ্দের চেয়ে বেশি খরচ করেছে ২৭ মন্ত্রণালয় ‘প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি পাই-পয়সা চিন্তা করে খরচ করেন, হিপোক্রেসি করেন না’
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রতিটি পাই-পয়সা চিন্তা করে খরচ করেন। যেখানে যেটা প্রয়োজন সেখানে সেটা খরচ করা হয়েছে। আমরা যথেচ্ছভাবে খরচ করিনি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মতো বলেননি, মানি ইজ নো প্রবলেম। কওমি মাদরাসার শিক্ষার সর্বোচ্চ ধাপকে স্নাতকোত্তরের মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিপোক্রেসি করেন না। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
মন্ত্রী জানান, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বরাদ্দকৃত অর্থের চেয়ে বেশি খরচ করেছে ২৭টি মন্ত্রণালয়। প্রয়োজনের নিরিখেই খরচ করেছে। এসব মন্ত্রণালয়ের মধ্যে খরচের উচ্চ বৃদ্ধি হারে রয়েছেÑ কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, সুরক্ষা বিভাগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ। এর কোনোটিই অপ্রয়োজনীয় নয়। এই ২৭ মন্ত্রণালয়ে মোট বরাদ্দ ১ লাখ ১১ হাজার ৮৬০ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আর মোট ব্যয় ১ লাখ ৩০ হাজার ২৩০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ সম্পূরক দাবি ১৮ হাজার ৩৭০ কোটি ২২ লাখ টাকা।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমরা ইচ্ছা করলে সবগুলো মন্ত্রণালয় সব টাকা খরচ করতে পারতাম। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রীর চিন্তা-ভাবনা সেটা না। আর আমাদের অর্থমন্ত্রী তো অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের কিভাবে হ্রাস টানতে হয় সেটা ভালভাবেই জানেন। তবে যেটা প্রয়োজন ছিল সেটা খরচ করার ক্ষেত্রে তিনি কার্পণ্য করেননি।
এছাড়া জাতীয় পার্টির সদস্য সেলিম উদ্দিন আলোচনায় অংশ নিয়ে সম্পূরক বাজেটের সমালোচনা করে বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের প্রথম ১০ মাসে কাজের অগ্রগতি ৫১ শতাংশ আর শেষ দুই মাসে কিভাবে ৪১ শতাংশ কাজ হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। আর ৩৫টি মন্ত্রণালয় যে বরাদ্দকৃত টাকা খরচ করতে পারল না।
কওমি মাদ্রাসাকে সর্বোচ্চ স্বীকৃতি দেওয়ার প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করে সামনে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অনেকে চায় মাদ্রাসা শিক্ষা মান্ধাতার আমলে থাক।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন এলে হুজুরদের গিয়ে বলে, ‘লক্ষ্য রাইখেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি।’ পরক্ষণে আবার তারা মডার্ন হয়ে যায়। এটা এক ধরনের হিপোক্রেসি। প্রধানমন্ত্রী হিপোক্রেসি করেন না।
শিক্ষাব্যবস্থার সমালোচনা করে তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী চিৎকার করেন। আসলে শিক্ষার মান বলতে কিছু নেই। যারা এসএসসি-এইচএসসি পাস করে তাদের অনেকে এখন জানে না বাংলাদেশের রাজধানী কোথায়। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ