টুপি তৈরিতে ব্যস্ত নওগাঁর নারীরা
আশরাফুল নয়ন, নওগাঁ: সুই আর সুঁতো দিয়ে বাহারি ডিজাইন করে টুপি তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁর নারী টুপি কারিগররা। সারা বছরই টুপি তৈরির টুকটাক কাজ হলেও রমজান এবং ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়ে যায়। সুঁই-সুতা দিয়ে তৈরি চমৎকার এসব টুপি চাহিদাও ব্যাপক। তবে দেশের বাজারে এসব টুপির দাম বেশি হওয়ায় রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে ।
নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার প্রতন্ত একটি গ্রাম সুলতানপুর। এ গ্রামে ঢুকলেই চোখে পড়বে সুঁই আর সুঁতোর নিপুন খেলায় টুপি তৈরির কাজ করার মনমুগ্ধকর দৃশ্য। মনের মাধুরি মিশিয়ে সাদা কাপড়ের টুপির উপর বিভিন্ন রং এর সুঁতো দিয়ে ফুটিয়ে তুলা হচ্ছে ফুল। পাড়ার মেয়েরা কোন ছায়া জায়গাতে একত্রিত হয়ে হয়ে পাটি বিছিয়ে নিজেদের সংসারের ভাল মন্দ গল্পের পাশাপাশি কাজ করে চলছেন। শুধু সুলতানপুরই নয়। উপজেলার শিবগঞ্জ, তাতারপুর, হরমনগর, মধুবন, উত্তরগ্রাম, কুঞ্জবনসহ বিভিন্ন গ্রামে নারীরা এখন এ টুপি তৈরীতে ব্যস্ত। ঈদে বোনাসের পরিমাণ টা একটু বেশি পেতেই পাইকারদের কাছ থেকে নেয়া এসব সাদা টুপি সেলাইয়ের পর বুঝিয়ে দিতে কারিগরদের তোড়জোড় চলছে।
সংসারের কাজের পাশাপাশি সারা বছরই টুপি তৈরি হয়। আর টুপি তৈরি করে বাড়তি আয় করছেন গ্রামীন এই নারীরা। পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও টুপি তৈরী কাজ করে থাকে। বেশির ভাগ বোতাম সেলাই ও চেইন সেলাই টুপি তৈরী করা হয়। সুঁই-সুঁতো দিয়ে নিপুন হাতে প্রতিটি টুপি তৈরী করতে প্রায় ১৫/২০ দিন সময় লাগে। তবে এ কাজ করে স্বাবলম্বী হলেও সময়ের ন্যায্য মজুরি তারা পান না। জেলার মধ্যে মহাদেবপুরে এ টুপির উৎপত্তি। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন জেলার ১১টি উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে এ টুপি তৈরী। টুপির সাথে দুই হাজারের অধিক ব্যবসায়ী জড়িত। আর টুপি তৈরির সঙ্গে প্রায় ৩০ হাজার নারী কারিগর সম্পৃক্ত। উপার্জনের অন্যতম পথ এই টুপি তৈরী। আর তাই সামান্য পৃষ্টপোষকতাই পারে এ পথকে আরও সুগম করতে। এই গ্রামের গৃহবধু মোরশেদা বলেন, সাংসরের কাজের পাশাপাশি এ টুপি তৈরির কাজ করা হয়। তবে রমজান এবং সামনে ঈদের জন্য ব্যস্ততা একটু বেশি। মূলত বোতাম সেলাই ও চেইন সেলাই টুপি তৈরী করা হয়। বোতাম সেলাই টুপির পরিশ্রম একটু বেশি এবং পারিশ্রমিক ৪০০-৫৫০ টাকা। আর সময় লাগে ১৫/২০ দিন। চেইন সেলাই টুপি সহজ ও সময় কম লাগে। কাজ দ্রুত হয়। পারিশ্রমিক ৩০০-৩৫০ টাকা। তবে পরিশ্রমের তুলনায় পারিশ্রমিক খুবই কম। সম্পাদনা: মুরাদ হাসান