স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের হুমকি আপন জুয়েলার্সের সোনা ফেরত না দিলে রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট
মাসুদ মিয়া : আপন জুয়েলার্সের জব্দ করা সোনা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফেরত না দিলে রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি। গতকাল বুধবার বায়তুল মোকাররমে সমিতির কার্যালয়ে দুই ঘণ্টা বৈঠকের পর সংগঠনের সহ-সভাপতি এনামুল হক খান দোলন সাংবাদিকদের সামনে এই ঘোষণা দেন। আপন জুয়েলার্সের স্বর্ণ ফেরত দেওয়া এবং সোনা আমদানির নীতিমালা করার পাশাপাশি শুল্ক গোয়েন্দা মহাপরিচালক মইনুল খানের অপসারণও দাবি করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি। এনামুল হক বলেন, বাংলাদেশের জুয়েলারি শিল্পকে ধ্বংসের জন্য যে নীল নকশা হয়েছে তা বাস্তবায়ন করছে শুল্ক গোয়েন্দা মহাপরিচালক মইনুল খান।
বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি বিক্রয়কেন্দ্র থেকে আটক করা ৫৬৭ দশমিক ৫৪ কেজি (১৫ দশমিক ১৩ মণ) সোনা এবং সাত হাজার ৩৬৯টি ডায়মন্ডখচিত স্বর্ণালঙ্কার জব্দ করে গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। বনানীর এক হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধুদের নাম আসার পর শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ আপনের সোনার উৎস নিয়ে এই তদন্ত শুরু করে।
আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ ও তার দুই ভাই গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদ দুই দফায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরে গিয়ে শুনানিতে অংশ নেন। কিন্তু তারা এসব সোনা ও হীরা আমদানি বা মালিকানার বিষয়ে কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। এনামুল হক বলেন, এ শিল্পকে ধ্বংসের জন্য কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ব্যবসায়ীদের স্বর্ণ আটক করা হয়েছে। সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে মহাপরিচালক (মইনুল খান।) আশ্বাস দিয়েছিলেন, স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কোনো ধরনের হয়রানি করবেন না। কিন্তু তিনি তার কথা রাখেননি। তিনি বলেছেন, সুনির্দষ্ট অভিযোগ পেলেই অভিযান চালাবেন। মঈনুল খানের সমালোচনা করে এনামুল হক বলেন, সকাল হলেই মিডিয়ার সামনে এসে উনি স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কথা বলেন। একজন সরকারি কর্মকর্তা এত সময় পান কোথায়? এ কর্মকর্তাকে অপসারণ করতে হবে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সহ-সভাপতি বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আপন জুয়েলার্স যেভাবে ব্যবসা করেছে, সেরকম সারাদেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা একইভাবে ব্যবসা করেন। আপনি অভিযোগ দেবেন আর স্বর্ণের অভিযান চালাবেন- এভাবে হতে দেব না। যতদিন পর্যন্ত না স্বর্ণ আমদানির নীতিমালা হয় ততদিন আন্দোলন চালিয়ে যাব।
স্বর্ণ আমদানি নীতিমালা বাস্তবায়ন দাবি জানান সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট এনামুল হক খান। তিনি আরও জানান, তাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সমিতির পক্ষ থেকে আগামী ১২ জুন অর্থমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ এবং ১৫ জুন সমাবেশ করার ঘোষণা দেওয়া হয়। সম্পাদনা : মাকসুদা লিপি