সংসদে প্রধানমন্ত্রী হঠাৎ শুনি আমরা দুই বোন এতিম হয়ে গেছি জিয়ার কারণে নির্বাসিত জীবন হয়েছে আমাদের
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি ও রেহানা ১৯৭৫ সালের ৩০ জুলাই ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে ৩১ জুলাই জার্মানি পৌঁছাই। এরপর ১৫ দিনের মাথায় হঠাৎ শুনি আমরা দুই বোন এতিম হয়ে গেছি। নিঃস্ব, রিক্ত হয়ে গেছি। তিনি বলেন, খুনি মোশতাক ও তার দোসর জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্ট হত্যাকা- চালায়। জিয়ার কারণেই নির্বাসনে থাকতে হয়েছে আমাদের। গতকাল জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে বঙ্গবন্ধু হত্যাকা- ও পরর্বতীতে দেশে ফেরা সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এমপি শাহজাহান কামাল প্রশ্ন করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসায় প্রবেশে কোনও ধরণের বাধা পেয়েছিলেন কিনা।
এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, খুনি মোশতাক ও তার দোসর জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্ট হত্যাকা- চালানোরন পর আরও হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পালা শুরু হয়। জিয়া নিজেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করেন। আমি ও রেহানা দেশে ফিরতে চাইলে আমাদের বাধা দেওয়া হয়। রেহানার পাসপোর্টের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে জিয়াউর রহমানের নির্দেশে বর্ধিত করা হয়নি। ওই পাসপোর্টও ফেরৎ দেওয়া হয়নি। ১৯৭৫-১৯৮১ সাল পর্যন্ত আমাদের বিদেশেই থাকতে হয়। খুনি জিয়া আমাকে ও আমার বোনকে দেশে আসতে দেয়নি। আওয়ামী লীগ আমাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করার পর ১৯৮১ সালের ১৭ মে আমি দেশে ফিরে আসি।
দেশের আসার পরের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে ফিরে ধানমান্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে গেলে আমাকে ওই বাড়িতে যেতে দেওয়া হয়নি। বাবা-মা, ভাইয়ের জন্য একটু দোয়া করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। পুলিশি প্রহরা ও গেটে তালা দিয়ে আমার পথ রুদ্ধ করা হয়। আমি রাস্তার উপরই বসে পড়ি এবং আমাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে মিলাদ ও দোয়া পড়ি। ১৯৮১ সালের ১২ জুন পর্যন্ত ওই বাড়িতে আওয়ামী লীগের কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর ১৯৮১ সালের ১২ জুন হঠাৎ করে এক ঘণ্টার নোটিশে বাড়িটি আমাকে তাড়াহুড়ো করে হস্তান্তর করা হয়। খুনি, ষড়যন্ত্রকারীরা জনমানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। কাজেই অধিকার ক্ষুণেœর দিক থেকে আমি ও আমার বোন ব্যতিক্রম ছিলাম না। সম্পাদনা : রিকু আমির